পাতা:রাশিয়ার চিঠি-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৪১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

ঐকত্রিকতার সুযোগ কত তা ওদের বুঝিয়ে দেয়। ঐকত্রিক দলের চাষী-মেয়েদের জীবনযাত্রা সহজ করে দেবার জন্য প্রত্যেক ঐকত্রিক ক্ষেত্রে একটি করে শিশুপালনাবাস, শিশুবিদ্যালয় আর সাধারণ পাকশালা স্থাপিত হয়েছে।”

 সুখোজ প্রদেশে জাইগাণ্ট নামক একটি সুবিখ্যাত সরকারি কৃষিক্ষেত্র আছে। সেখানকারএকজন চাষী রাশিয়ায় ঐকত্রিকতার কী রকম বিস্তার হচ্ছে সেই সম্বন্ধে আমাকে বললে, “আমাদের এই খেতে জমির পরিমাণ এক লক্ষ (hectares) হেকটার। গত বছরে সেখানে তিন হাজার চাষী কাজ করত। এ-বছরে সংখ্যা কিছু কমে গেছে, কিন্তু ফসলের ফলন আগেকার চেয়ে বাড়বার কথা। কেননা জমিতে বিজ্ঞানসম্মত সার দেবার এবং কলের লাঙল ব্যবহার করবার ব্যবস্থা হয়েছে। এই রকম লাঙল এখন আমাদের তিন-শর বেশি আছে। প্রতিদিন আমাদের আট ঘণ্টা কাজ করবার মেয়াদ। যারা তার বেশি কাজ করে তারা উপরি পারিশ্রমিক পায়। শীতের সময় খেতের কাজের পরিমাণ কমে, তখন চাষীরা বাড়ি-তৈরি রাস্তা-মেরামত প্রভৃতি নানা কাজে শহরে চলে যায়। এই অনুপস্থিতির সময়েও তারা বেতনের এক-তৃতীয়াংশ পেয়ে থাকে আর তাদের পরিবারের লোক তাদের নিদিষ্ট ঘরে বাস করতে পায়।”

 আমি বললেম, “ঐকত্রিক কৃষিক্ষেত্রে আপন স্বতন্ত্র সম্পত্তি মিলিয়ে দেওয়া সম্বন্ধে তোমাদের আপত্তি কিংবা সম্মতি যদি থাকে আমাকে স্পষ্ট করে বলো।”

 পরিদর্শক প্রস্তাব করলে হাত তুলে মত জানানো হোক। দেখা গেল যাদের সম্মতি নেই এমন লোকও অনেক আছে। অসম্মতির কারণ তাদের বলতে বললুম—ভালো করে বলতে পারলে না। একজন বললে, আমি ভালো বুঝতে পারি নে। বেশ বোঝা গেল অসম্মতির কারণ

২৯