পাতা:রুষ-জাপানি যুদ্ধের ইতিহাস - নলিনীবালা ভঞ্জ চৌধুরাণী.pdf/১৪৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

S80 রুষ-জাপান যুদ্ধের ইতিহাস । এই সময়ে বহুদূর ঘুরিয়া জাপানী বামদল আসিয়া তাহাদিগকে আক্রমণ করিল। তাঁহাদের উপর অজস্ৰ গোলাবৃষ্টি হইতে লাগিল। জাপানিগণ কেবল “সার্পনেল” গোলা ছুড়িতেছে। এই ভয়াবহ গোল শত সহস্র গুলি ও ছোরা ছুরিতে পূর্ণ। ইহারা নিক্ষিপ্ত হইলে, মাথার উপর আসিয়া ফাটিয়া যায় ;-তখন সহস্ৰ গুলি ও ছোরা ছুরি সৈন্যগণের মধ্যে তীরবেগে প্ৰক্ষিপ্ত হইতে থাকে,-একটী গোলাতেই শত শত লোক প্ৰাণ হারায়। রুষ-অশ্বারোহীগণের মধ্যে মিনিটে মিনিটে এই ভয়াবহ “সার্পনেল” পতিত হইয়া সৰ্ব্বনাশ সাধন করিতেছিল,-অথচ তাহারা জাপানিদিগের কিছুই করিতে পারিতেছে না। জাপানী বামদল এখনও পুরুষগণের ঠিক পশ্চাতে আসিতে পারে নাই ; তেলিসু হইতে লিওযাং পৰ্যন্ত রেল তখনও চলিতেছে। এই যুদ্ধের সময় একদল রুমসৈন্য লিওযাং হইতে রেলপথে যুদ্ধক্ষেত্রে আসিয়া উপস্থিত হইল। একদিকে যুদ্ধ হইতেছে—অপরদিকে রেলে দলে দলে সেনা আসিয়া যুদ্ধে যোগদান করিতেছে—বোধ হয় এ দৃশ্য এই প্ৰথম । কিন্তু যুদ্ধও প্ৰায় শেষ হইয়া আসিয়াছে। জাপানী বামদল ও মধ্যদলকে রুষ প্ৰতিরোধ করিতে পারিলেন না।--কেবল দক্ষিণ দল টলমল করিতেছে। ইহাতে রুষের আর যুদ্ধে জয়ের আশা নাই। আব্ব বিলম্ব করিলে জাপানিগণ তাহাদিগকে একবারে ঘেরিয়া ফেলিবে,-তখন মৃত্যু বা আত্মসমর্পণ ব্যতীত আর দ্বিতীয় উপায় থাকিবে না। রুষ-সেনাপতি তাহা বুঝিলেন। তাহাই তিনি সময় থাকিতে থাকিতে সেনাগণকে পশ্চাৎপদ হইতে আজ্ঞা দিলেন ; কিন্তু সম্মুখে যুদ্ধ চলিতে লাগিল। রেল ষ্টেলনে কয়েক খান ট্রেন সজ্জিত ছিল,—তাহাতে আহতগণ ও মূল্যবান দ্রব্যাদি বোঝাই হইল - তখন সেই সকল গাড়ী একে একে ছাড়িতে লাগিল ; কিন্তু ইহারই মধ্যে ষ্টেসনের উপর জাপানী গোলা পতিত হইতে আরম্ভ হইয়াছে।