পাতা:রূপসী বোম্বেটে - দীনেন্দ্রকুমার রায়.pdf/১০৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ষষ্ঠ পরিচ্ছেদ
৯৫

আত্মীয়-বিয়োগ বেদনা অনুভব করিতেছি। যদি তিনি আমার প্রস্তাবে সম্মত হইতেন, আমার দলে যোগ দিতেন, তাহা হইলে তাঁহার সহায়তার পৃথিবীতে কোন্ কার্য্য আমার অসম্ভব হইত? এমন শক্তিসম্পন্ন উদার হৃদয়,প্রতিদ্বন্দ্বী আর কখনও পাইব না।”

 আমেলিয়া উঠিয়া তাঁহার কেবিনে প্রবেশ করিলেন, এবং দ্বার রুদ্ধ করিয়া একখানি পিত্তল নির্ম্মিত খট্টায় দেহ-র প্রসারিত। করিলেন। তাঁহার নয়নযুগল হইতে মুক্তা-বিন্দুর ন্যায় অশ্রু বর্ষিত হইতে লাগিল।

 মিঃ ব্লেকের হত্যা-সংবাদে আমেলিয়ার, এরূপ ভাবান্তর লক্ষ্য করিলে তাঁহার অনুচরগণ নিশ্চয়ই বিস্ময়ে স্তম্ভিত হইত; কারণ, তাহারা জানিত না, মিঃ ব্লেকের সহিত পূর্ব্বে একাধিকবার তাঁহার সাক্ষাৎ হইয়াছিল; এমন কি, আমেলিয়া তাঁহার রূপ গুণে আকৃষ্ট হইয়া তাঁহার প্রেমে আত্মহারা হইয়াছিলেন। তিনি আকার ইঙ্গিতে মিঃ ব্লেককে তাঁহার মনের ভাবও জানাইয়াছিলেন। কিন্তু মিঃ ব্লেক মানব-হিতব্রতে জীবন উৎসর্গ করিয়াছিলেন, বিবাহে তাহার প্রবৃত্তি ছিল না। ‘রূপসী বোম্বেটে’কে বিবাহ করিবার ইচ্ছা ত দূরের কথা! প্রেমের প্রত্যাখানে আমেলিয়া ক্ষুব্ধ হইয়াছিলেন, মিঃ ব্লেকের প্রতি বিরক্তও হইয়াছিলেন। কিন্তু আজ তিনি বুঝিতে পারিলেন, ব্লেককে তিনি ভুলিতে পারেন নাই। যে প্রেম তাঁহার হৃদয়ে অন্তঃশলিলা ফন্তুর ন্যায় প্রবাহিত হইতেছিল, মিঃ ব্লেকের মৃত্যু-সংবাদে তাহা। তাঁহার নারী-হৃদয়’ প্লাবিত করিয়া নয়ন-পথে অশ্রুর নিঝর মুক্ত করিল।

 মিঃ ব্লেকের মৃত্যু সংবাদে রাইমারেরও আনন্দের সীমা রহিল না। যে ব্লেকের ভয়ে সে ইংলণ্ড হইতে পলায়ন করিয়াছিল, আমেলিয়ার