পাতা:রূপসী বোম্বেটে - দীনেন্দ্রকুমার রায়.pdf/১১৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

সপ্তম পরিচ্ছেদ


মিঃ ব্লেক আততায়ীর ছুরিকাঘাতে সাল্‌ভেরিটা-রাজধানীর সেই অন্ধকারপূর্ণ সঙ্কীর্ণ গলিতে ভূতলশায়ী হইলে তাঁহার চেতনা বিলুপ্ত হইয়াছিল; সে কথা বোধ হয় পাঠকগণের স্মরণ আছে।

 চেতনাসঞ্চার হইলে তিনি দেখিতে পাইলেন, একটি জীর্ণ কুটীরের এক প্রান্তে একটি অপরিচ্ছন্ন শয্যায় শায়িত আছেন।

 মিঃ ব্লেক চক্ষু মেলিয়া একবার চারি দিকে চাহিলেন, তাহার পর উঠিবার চেষ্টা করিলেন। কিন্তু তখনও তাঁহার সর্ব্বাঙ্গ আড়ষ্ট, স্কন্ধের বেদনাও অসহ্য; তিনি উঠিতে পারিলেন না। তিনি বুঝিলেন, তাঁহার পার্শ্বপরিবর্ত্তনেরও শক্তি নাই!

 তিনি চক্ষু মুদিত করিয়া ভাবিতে লাগিলেন—এই অপরিচিত স্থানে তিনি কখন আসিয়াছেন, কে-ই বা তাঁহাকে এখানে আনিয়াছে? কিন্তু কোনও কথা তাহার মনে পড়িল না; নানা চিন্তায় তাঁহার মন অস্থির হইয়া উঠিল। হঠাৎ কাহার পদশব্দে তাঁহার চিন্তা-স্রোত অবরুদ্ধ হইল; তিনি চক্ষু মেলিয়া দেখিলেন, একটি যুবতী সেই কক্ষে প্রবেশ করিয়াছে। তিনি নির্ণিমেষ নেত্রে যুবতীর মুখের দিকে চাহিয়া রহিলেন, কিন্তু তাহাকে চিনিতে পারিলেন না।

 যুবতী ধীরে ধীরে আসিয়া তাঁহার শয্যা-প্রান্তে উপবেশন করিল, তাঁহার চেতনাসঞ্চার হইয়াছে দেখিয়া তাহার মুখ প্রফুল্ল হইল; সে তাহার বেদনাক্লিষ্ট, পাণ্ডুর মুখের দিকে চাহিয়া কোমল স্বরে, বলিল,