বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:রূপসী বোম্বেটে - দীনেন্দ্রকুমার রায়.pdf/১৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
রূপসী বোম্বেটে

পীড়াপীড়ি করিতেছে, শীঘ্র তাহাদের টাকাগুলি পরিশোধ না করিলেই নয়।”

 মিসেস কার্টার বলিলেন, “তোমার কথা বুঝিয়াছি। আমার শেষ সম্বল ‘বিনাগঙ্গ’ ষ্টেসনটিও ছাড়িয়া দিতে হইবে! শেষে তোমরা আমাকে গাছের তলায় বসাইলে!”

 মিশেস্‌ কার্টার আর আত্মসংবরণ করিতে পারিলেন না। নিজের জন্য তাঁহার কোন চিন্তা ছিল না; কিন্তু তাঁহার যুবতী কন্যা আমেলিয়ার কি গতি হইবে? আমেলিয়ার বয়স তখন উনিশ বৎসর; যুবতী সুন্দরী, অসাধারণ বুদ্ধিমতী, কিন্তু সংসারে তাঁহার আপনার বলিবার আর কেহ ছিল না। আমেলিয়া কোথায় আশ্রয় পাইবেন? মিসেস কার্টারের মাথা ঘুরিয়া উঠিল, তিনি মুর্চ্ছিত হইয়া চেয়ার হইতে নীচে পড়িলেন।

 পিয়ারসন ও তাহার সহকারী মর্টন মিসেস্‌ কার্টারকে তুলিবার জন্য তাড়াতাড়ী তাঁহার নিকট অগ্রসর হইল; কিন্তু আমেলিয়া বিদ্যুৎবেগে উঠয়া তাহাদিগকে সরিয়া যাইতে ইঙ্গিত করিলেন, তাহার পর তাঁহার জননীর সংজ্ঞাহীন দেহ ক্রোড়ে তুলিয়া লইয়া কক্ষান্তরে প্রস্থান করিলেন। সেখানে তাঁহাকে একটি শয্যায় শয়ন করাইয়া তাঁহার মস্তকে ও ললাটে জলসিঞ্চন করিতে লাগিলেন।

 মর্টন অস্ফুট স্বরে বলিল, “জীবনে অনেক অপকর্ম্ম করিয়াছি, কিন্তু এবার এই বিধবার সর্ব্বনাশ করিয়া আমার বড়ই অনুতাপ হইতেছে।”

 পিয়ারসন চক্ষু রক্তবর্ণ করিয়া সরোষে বলিল, “চুপ করিয়া থাক। আমরা যে কাজে হাত দিয়াছি, তাহা শেষ করিতেই হইবে; এখন অনুতাপ করিয়া কোনও ফল নাই। তোমার ধর্ম্মজ্ঞান এত প্রবল