পাতা:রূপসী বোম্বেটে - দীনেন্দ্রকুমার রায়.pdf/১৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
রূপসী বোম্বেটে
১১

সুস্পষ্ট ঘৃণার সহিত উত্তেজিত স্বরে বলিলেন, “তোমরা কি ভাবে আমাদের সর্বস্ব অপহরণ করিয়াছ, তাহা আমি জানিতে পারিয়াছি। আমার মা খনির কাজকর্ম্ম বুঝিতেন না, তিনি তোমাদের কুপরামর্শে ভুলিয়া জিগ্‌স খনি বন্ধক দিতে সম্মত হইয়াছিলেন, তোমরা সেই খনি বন্ধক দিয়া যে টাকা পাইয়াছ তাহা আত্মসাৎ করিয়াছ। আমার বাবার যে কিছু বিষয় সম্পত্তি ছিল, তাহা গ্রাস করিয়াও তোমাদের ক্ষুধা মেটে নাই, শেষে এই ভাবে আমার মায়েরও সর্ব্বনাশ করিলে! তোমাদের দুষ্কর্ম্মের প্রতিফল দানের পূর্ব্বেই বাবার মৃত্যু হইয়াছিল। তোমাদের শয়তানীতেই আজ আমি পথের কাঙ্গাল। যদি আইনের সাহায্যে তোমাদের এই বিশ্বাসঘাতকতা ও প্রবঞ্চনার উপযুক্ত দণ্ড প্রদান করা সম্ভব হয়, তবে আমি সে চেষ্টার ত্রুটী করিব না; কিন্তু তোমরা বড় ধূর্ত্ত, বোধ হয় আইন বাঁচাইয়া কাজ করিয়াছ, রাজদ্বারে অভিযোগ করিয়া হয় ত তোমাদিগকে শাস্তি দিতে পারিব না। না পারি ক্ষতি নাই, রাজদণ্ড যে কার্য্যে অক্ষম, আমার শক্তি সে কার্যে অসমর্থ হইবে না।

 “তোমরা আমার টাকা চুরি করিয়াছ, আমার তালুক মুলুক, খনি, জমী-জমা আত্মসাৎ করিয়াছ সেজন্য আমি কাতর নহি; কিন্তু আবার স্নেহময়ী জননী তোমাদের অত্যাচারে-তোমাদের পৈশাচিক ব্যবহারে ভগ্ন-হৃদয়ে প্রাণত্যাগ করিয়াছেন; তোমরা নারীহত্যা করিয়াছ; তোমরা আমার মাতৃহন্তা! তোমাদের এ অপরাধ আমি ক্ষমা করিব না। আমি আমার জননীর মৃত দেহ স্পর্শ করিয়া সপথ করিয়াছি—যে পর্য্যন্ত তোমাদের দলের প্রত্যেক বিশ্বাসঘাতক শয়তানকে অপমানিত ও লাঞ্ছিত—মৃত্যু-যন্ত্রণা তুল্য যন্ত্রণা-গ্রস্ত না। করি, যে পর্য্যন্ত তোমরা, সর্বস্বান্ত হইয়া আমার মত পথে না বস,