বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:রূপসী বোম্বেটে - দীনেন্দ্রকুমার রায়.pdf/২৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
রূপসী বোম্বেটে
১৯

শোভিত, পতাকার পার্শ্বে সর্ব্বজন-সমাদৃত প্রেসিডেণ্টের চারুচিত্র সন্নিবিষ্ট। যে শিল্পী মজলিস সাজাইয়া ছিল, তাহার রুচি-নৈপুণ্যের প্রশংসা না করিয়া থাকা যায় না। নিমন্ত্রিত নরনারীগণের বিশ্রামের জন্য বহু অর্থব্যয়ে চিরহরিৎ গুল্ম ও ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র বৃক্ষ দ্বারা কুঞ্জ রচিত হইয়াছিল। যেন প্রকৃতি দেবী স্বহস্তে এই সকল কুঞ্জ নির্মাণ করিয়াছেন—এমনই সুন্দর নির্মাণ-কৌশল! এই সকল কুঞ্জের মধ্যে বিভিন্ন গুল্মের অন্তরালে সুদৃশ্য কাষ্ঠাসন সংরক্ষিত ছিল; শ্রান্ত প্রেমিকযুগল নৃত্যের অবসানে সেখানে বসিয়া যাহাতে মনের দ্বার উদঘাটিত করিয়া নিভৃতে গল্প করিতে পারে—তাহার যথাযাগ্য ব্যবস্থা করা হইয়াছিল।

 নৃত্যের দিন সন্ধ্যার পর রাইমার অন্যের অলক্ষ্যে ‘বলরুমে’ প্রবেশ করিল। স্পেনীয় ভাষায় তাহার যথেষ্ট অভিজ্ঞতা ছিল, এবং সে স্পেন দেশীয় লোকের ন্যায় ছদ্মবেশ ধারণ করিয়া আসিয়াছিল। তাহাকে সেই বেশে দেখিলে কেহই বলিতে পারিত না যে, সে স্পেন দেশের লোক নহে।

 বলরুমে প্রবেশ করিয়া রাইমার একটি স্তস্তের পার্শ্বে দণ্ডায়মান হইয়া নিমন্ত্রিত নরনারীগণকে দেখিতে লাগিল।

 রাইমার প্রায় এক ঘণ্টা সেখানে দাঁড়াইয়া রহিল, কেহ তাহাকে চিনিত না, সুতরাং কেহই তাহাকে কোনও কথা জিজ্ঞাসা করিল না; সে-ও কাহারও সহিত আলাপ করিল না। এই ভাবে দণ্ডায়মান থাকিয়া শ্রান্তিবোধ করিলে রাইমার বলরুমের অভ্যন্তরস্থ দ্বার অতিক্রম পূর্ব্বক পূর্ব্ব-বর্ণিত বিরাম-কুঞ্জে প্রবেশ করিল, এবং একটি গুল্মের অন্তরালে একখানি চেয়ারে বসিয়া পড়িল।

 সেই স্থানে বসিয়া চারিদিকে চাহিতে চাহিতে, হঠাৎ দ্বারপ্রান্তে