পাতা:রূপসী বোম্বেটে - দীনেন্দ্রকুমার রায়.pdf/৩১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
রূপসী বোম্বেটে
২৩

ছাড়াইবার শক্তি তোমার নাই, সে হার আমার হস্তগত হইবেই। শুভক্ষণে আজ এই মজলিশে প্রবেশ করিয়াছিলাম।—না, এই যুবতীর সহিত পরিচয় না করিলে চলিতেছে না। চুরীর ব্যবসায়ে যদি আমি উহাকে আমার দলে টানিয়া আনিতে পারি, তাহা হইলে পৃথিবীতে আমি অজেয় হইব সন্দেহ নাই, কিন্তু হার ছড়াটি অগ্রে চাই।”

 অনন্তর রাইমার ভোজনের টেবিলে উপবেশন পূর্ব্বক প্রফুল্ল চিত্তে আহার করিল, উৎকৃষ্ট সুরাপানে তাহার স্ফুর্ত্তি বর্ধিত হইল। কিন্তু যদি সেই যুবতীর পরিচয় তাহার জানা থাকিত, তাহা হইলে সে বুঝিতে পারিত, তাহার এরূপ হর্ষোন্মত্ত হইবার কারণ নাই। সে জানিত না—এই যুবতী তাহাকে একহাটে কিনিয়া আর এক হাটে বিক্রয় করিতে পারে!

 পাঠক বোধ হয় বুঝিয়াছেন, এই যুবতী আমাদের পূর্ব্বপরিচিতা বোম্বটে সর্দারণী আমেলিয়া কার্টার। জিগ্‌স খনির ডিরেক্টর জেমস্ পিয়ারসনের সর্বনাশ সাধনের জন্য আমেলিয়া, কার্টার পিয়ারসনের কোনও সম্ভ্রান্ত বন্ধুর জাল পরিচয়-পত্র আনিয়া সাল্‌ভেরিটা রাজ্যে পদার্পণ করিয়াছিলেন।

(৫)

 আহারান্তে ডাক্তার রাইমার আমেলিয়ার সহিত আলাপ করিবার সুযোগ অন্বেষণ করিতেছি; কিন্তু আমেলিয়ার নিকট তখন অনেক লোক ছিল বলিয়া সে তাঁহার নিকট অগ্রসর হয় নাই। অনেকক্ষণ পরে আমেলিয়াকে একাকিনী একখানি চেয়ারে উপবিষ্টা দেখিয়া রাইমার উঠিয়া তাঁহার নিকটে আসিয়া দাঁড়াইল, এবং কোমল সুরে বলিল, “সিনোরিটা (কুমারী সাহেবা) কে বড় ক্লান্ত বোধ হইতেছে, বিরাম-কুঞ্জে কিছুকাল বিশ্রাম করিলে ক্লান্তি দূর হইতে পারে।”