২৬
রূপসী বোম্বেটে
যে-ই হউক, উহার সহিত এখন অশিষ্ট ব্যবহার করা হইবে না, তাহাতে গুপ্ত কথা প্রকাশ হইয়া পড়িতে পারে। দেখি উহার উদ্দেশ্য কি?”
এই সকল কথা চিন্তা করিয়া আমেলিয়া মৃদু হাস্যে ওষ্ঠ সুরঞ্জিত করিয়া কোমল স্বরে বলিলেন, “হাঁ, সত্যই আমি ক্লান্ত হইয়াছি, আপনার অনুরোধ রক্ষায় আমার বিশেষ আপত্তি নাই, কিন্তু অগ্রে আমার পাখাখানি দিন।”
রাইমার বলিল, “আপনার পাখা আপনি লইবেন এ আর অধিক কথা কি? কি এ বড় সুন্দর পাখা, আমার হাতে খানিক ক্ষণ থাকিলে ক্ষতি কি? চলুন, আমি ইহা লইয়াই আপনার সঙ্গে যাইতেছি।”
আমেলিয়া নিফল ক্রোধে ওষ্ঠ দংশন করিলেন, তাহার পর নেপথ্যবর্তী নির্জ্জন বিরাম-কুঞ্জের দিকে অগ্রসর হইলেন, রাইমার পাখাখানি হাতে লইয়া তাঁহার পাশে পাশে চলিল।
আমেলিয়া বিরাম-কুঞ্জে প্রবেশ পূর্ব্বক তাল-জাতীয় গুল্মের অন্তরালস্থিত একখানি চেয়ারে উপবেশন করিলে, রাইমার তাঁহার অদূরে আরি একখানি চেয়ারে বসিল; তাহার পর আমেলিয়াকে নিম্ম স্বরে বলিল, “এখন আমরা নিশ্চিন্ত মনে আলাপ করিতে পারি। পাখা সম্বন্ধে আমি যে আলোচনা করিতেছিলাম, প্রথমে কি সেই কথাই তুলিব?”
আমেলিয়া গম্ভীর স্বরে বলিলেন, “এ আলোচনা বন্ধ রাখিলে কোনও ক্ষতি নাই, বিষয়টা নিতান্তই অকিঞ্চিৎকর। আপনি নিশ্চয় কোনও গুপ্ত অভিসন্ধিতে আমার সহিত সাক্ষাৎ করিতে আসিয়াছেন; আপনার কি অভিপ্রায়, অগ্রে তাহাই জানিতে ইচ্ছা করি।”