রূপসী বোম্বেটে
৩৯
রাইমার বলিল, “না, কোনও আপত্তি নাই। ছোট-খাট খবর বলিয়া কোনও লাভ নাই, তবে একটা বড় খবর আছে বটে। এই রাজ্যের আর্থিক অবস্থা বড় শোচনীয়। সেইজন্য লণ্ডনে দুই কোটী টাকা কর্জ্জ লইবার প্রস্তাব চলিতেছে। শুনিয়াছি পঞ্চাশ বৎসরে শুল্ক বিভাগে কে আয় হইতে, তাহাই দিয়া এই ঋণ পরিশোধ করা হইবে। যাহারা ঋণ দিবে তাহারা প্রস্তাব করিয়াছে—শুল্ক বিভাগের কার্য্য তাহাদের নিজের লোক দ্বারা পরিচালিত করিতে হইবে।”
আমেলিয়া বলিলেন, “এই দুই কোটী টাকার একটা মোটা বখ্রা পাইতে তোমার আপত্তি আছে কি?”
রাইমার হর্ষ-বিগলিত স্বরে বলিল, “আপত্তি? যদি এই টাকাগুলা মারিতে পারা যায়—তবে সে জন্য আমি মাথা দিতেও রাজী আছি।”
আমেলিয়া বলিলেন, “কাজটা কঠিন বটে, কিন্তু চেষ্টা করিতে ক্ষতি কি? মাথা না দিয়াও কার্যোদ্ধার হইতে পারে।”
রাইমার বলিল, “আপনি কি সত্যই এজন্য চেষ্টা করিবেন?”
আমেলিয়া বলিলেন, “আমি কি তোমার সঙ্গে পরিহাস করিতেছি?”
রাইমার বলিল, “এ সকল কাজে আমার খুব উৎসাহ, মাথাও এক রকম খেলে। এখন আমাকে কি করিতে হইবে বলুন।”
আমেলিয়া বলিলেন,“তুমি বোধ হয় জান না আগামী মাসের প্রথম দিনে এই টাকা লণ্ডন হইতে এখানে প্রেরিত হইবে।”
রাইমার বলিল, “না, আমি তাহা জানিতাম না।”
আমেলিয়া বলিলেন, “হাঁ, ঐ দিন টাকা প্রেরিত হইবে বটে, কিন্তু এখানকার গবমেন্টের ধনাগারের নির্ন্মাণ-কার্য এখনও শেষ, হয় নাই, সুতরাং এ টাকা ধনাগারের রাখা হইবে না ইহা নিশ্চয়।”