পাতা:রূপসী বোম্বেটে - দীনেন্দ্রকুমার রায়.pdf/৫৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৪৬
রূপসী বোম্বেটে

কারণে তিনি তাড়াতাড়ী বিবাহের জন্য অত্যন্ত আগ্রহ প্রকাশ করিতেছিলেন, প্রণয়িনীর বিরহ-যন্ত্রণা তাঁহার অসহ্য হইয়া উঠিয়াছিল। জেনারেল মেন্‌ডোজারও এ বিবাহে আপত্তি ছিল না; তিনি তাঁহার কন্যার বিবাহে জামাতাকে পঞ্চাশ লক্ষ মুদ্রা যৌতুক দিবেন। প্রেসিডেণ্ট পিয়ারসন এ কথাও শুনিয়াছিলেন। তিনি চুরুট টানিতে টানিতে সুখের স্বপ্নে বিভোর হইলেন।

 হটাৎ সেক্রেটারী কর্টেজের পুনরাবির্ভাবে পিয়ারসনের সুখ-স্বপ্ন ভঙ্গ হইল, প্রফুল্ল মুখ দেখিতে দেখিতে গম্ভীর হইয়া উঠিল; তিনি চেয়ারে সোজা হইয়া বসিলেন।

 সেক্রেটারী কর্টেজ তাঁহাকে অভিবাদন করিয়া বলিল, “আমি সকল বন্দোবস্ত শেষ করিয়া আসিয়াছি। কাপ্তেন এলামেডা আপনার দেহ-রক্ষী সৈন্যদলের দশজনকে সঙ্গে লইয়া জাহাজে টাকা আনিতে গিয়াছেন। টাকাগুলি শীঘ্রই প্রাসাদে আনীত হইবে। এই দশজন রক্ষী-সৈন্য আজ রাত্রি দ্বিপ্রহর পর্যন্ত এখানে টাকার পাহারায় থাকিবে; তাহার পর লেফ্‌টেনাণ্ট সান্‌ড্রা আর দশজন রক্ষী-সৈন্য লইয়া পাহারায় আসিলে তাহারা ছুটী পাইবে। আপনার। শয়নকক্ষে পার্শে যে কুঠুরী আছে, তাহাতেই টাকাগুলি রাখিবার। ব্যবস্থা হইয়াছে। আমি লেফ্‌টেনাণ্ট সাণ্ড্রাকে বলিয়া দিয়াছি, তাহার প্রহরীর রাত্রে যেন কোনও রকম গণ্ডগোল করিয়া আপনার! নিদ্রার ব্যাঘাত না ঘটায়, তাহারা নিঃশব্দে পাহারায় নিযুক্ত থাকিবে।”

 প্রসিডেণ্ট পিয়ারসন বলিলেন, “তোমার বন্দোবস্তে আমি খুসী হইলাম। রাজকীয় ধনাগারের কাজ যাহাতে শীঘ্র শেষ হয় তুমি তাহার ব্যবস্থা করিবে। এত টাকা দীর্ঘকাল প্রাসাদে পড়িয়া থাকে, ইহা আমার ইচ্ছা নয়।”