পাতা:লক্ষণ সেন - দুর্গাদাস লাহিড়ী.pdf/৩০৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৩০২ লক্ষণ-সেন তুষ্টি-সম্পাদনে ক্রটি করেন নাই। নবদ্বীপাধিপতির এবহুপ্রকার আতিথ্য-সৎকারে বক্তিয়ার স মনে মনে যে একান্ত অপমানিত বোধ করিয়াছিলেন, তাহ বলাই বাহুল্য ; কিন্তু মুখ ফুটিয়া তিনি কদাচ সেরূপ ভাব প্রকাশ করেন নাই। অপমানের বিষয় মনে করিয়৷ এক একবার তাহার মন উত্তেজিত হইয়৷ উঠিয়াছিল বটে ; কিন্তু প রক্ষণেই ধৈর্য্যাবলম্বন করিয়াছিলেন। মনে মনে বলিয়াছিলেন,-—“লাহ্মণেয় ! এ অপমানের প্রতিশোধ একদিন-না-একদিন গ্রহণ করিবই করিব।” কিন্তু মুখে সৌজন্তের পরাকাষ্ঠ দেখাইয়াছিলেন ; আমন্ত্রণ-ছলে কহিয়াছিলেন,-“আমার রাজধানীতে মহারাজের যদি কখনও পদার্পণ হয়, আমি কিরূপে মহারাজের সম্বৰ্দ্ধনা করিব, ভাবিয়া পাইতেছি না !” লক্ষ্মণেয় সেই উক্তিতেই গলিয়া গিয়াছিলেন ; বলিয়াছিলেন,—“দেশ-দর্শনে আমার বড় সাধ । আপনার রাজধানী দর্শন ক্ষমিবায় আমার একান্তই ইচ্ছা রহিল।" বক্তিয়ার উত্তর দেন,--“আপনার সেই ইচ্ছা পূর্ণ হইলে, আমি কৃতাৰ্থ হইব ।” এবম্বিধ মিষ্ট্র-বাক্যের ফলে বক্তিয়ার তিন দিনের পরিবর্তে নবদ্বীপে সপ্তাহকাল অবস্থান করিতে পাইয়াছিলেন এবং একদিন নৌযানে আরোহণ করিয়া রাজবাড়ীর দুর্গ-পরিখা প্রভৃতি দেখিয়া লইয়াছিলেন। সে কয় দিন ত্রিলোচনের সহিত বক্তিয়ারের আর সাক্ষাৎ হইল না। ত্রিলোচনা একাকী বজরায় বসিয়া আপনার কুতকৰ্য্যের বিষয় চিন্তা করিবার অবসর পাইলেন । এ পর্য্যন্ত ত্রিলোচনা যেরূপ ব্যবহার করিয়া আসিয়াছিলেন, তাহাতে র্তাহার প্রতি বক্তয়ারের কোনই সন্দেহের কারণ উপস্থিত হয়