পাতা:লঘুগুরু প্রবন্ধাবলী - রাজশেখর বসু.pdf/১০৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বাংলা পরিভাষা
১০৫

যেমন—‘স্বর্ণ লৌহ’ বা ‘সােনা লােহা'। যদি না থাকে তবে প্রচুর ইংরেজী নাম নেব। বৈজ্ঞানিক বস্তু যে নামে পরিচিত, সেই নামই বহু পরিমাণে আমাদের মেনে নিতে হবে। রাসায়নিক ও খনিজ বস্তু এবং যন্ত্রাদি (যথা—মােটর, এঞ্জিন, পাম্প, স্কেল, লেন্স, থার্মমিটার, স্টেথস্কোপ) সম্বন্ধে এই কথা খাটে। রাসায়নিক মৌলিক পদার্থের তালিকায় স্বর্ণ লৌহ গন্ধক প্রভৃতি নামের সঙ্গে সঙ্গে অক্সিজেন ক্লোরিন সােডিয়ম থাকবে। ফরমুলা লিখতে ইংরেজী বর্ণই লিখব, ইংরেজী বর্ণমালা আমাদের অপরিচিত নয়। সাধারণত লিখব ‘লৌহ কঠিন, পারদ তরল। লেখবার কালি তৈয়ার করতে হিরাকস লাগে’। কিন্তু দরকার হলেই নির্ভয়ে লিখব—‘ফেরস সালফেট, অর্থোডাইক্লোরােবেনজিন, ম্যাগনেসাইট, রুমকফ্‌, কয়েল, ইলেকট্রন'। শ্রীযুক্ত মণীন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় বাংলা রাসায়নিক পরিভাষা রচনায় আশ্চর্য কৌশল দেখিয়েছেন। কিন্তু সে পরিভাষা কল্পান্তেও চলবে না। ‘অ্যাণ্টিমনি থায়ােফস্ফেট’এর চেয়ে মণীন্দ্রবাবুর ‘অন্তমনসশুল্বভাস্ফেত’ কিছুমাত্র শ্রুতিমধুর বা সুবােধ্য নয়। রামেন্দ্রসুন্দর লিখেছেন― ‘ভাষা মূলে সংকেতমাত্র। আমরা বিদেশী পারিভাষিক শব্দকে রূঢ়-অর্থ-বাচক সংকেত হিসাবেই গ্রহণ করব এবং তার প্রয়ােগবিধি শিখব। যাঁর কৌতূহল হবে তিনি ‘অক্সিজেন, অ্যাণ্টিমনি’ প্রভৃতি নামের ব্যুৎপত্তি খোঁজ করবেন, কিন্তু সাধারণের পক্ষে রূঢ় অর্থের জ্ঞানই যথেষ্ট। জীববিদ্যাতেও