পাতা:লঘুগুরু প্রবন্ধাবলী - রাজশেখর বসু.pdf/৮০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৭৬
লঘুগুরু
right

দেশবাসীর আত্মসম্মান রক্ষা পাইবে। যদি কলিকাতা ও অন্যান্য নগরের মিউনিসিপালিটি চেষ্টা করেন তবে তিলাদি তৈলের প্রচার সহজেই হইতে পারিবে। শ্রীযুক্ত চুনিলাল বসু, বিমলচন্দ্র ঘােষ, সুন্দরীমােহন দাস, রমেশচন্দ্র রায় প্রভৃতি ভিষক্‌ মহােদয়গণ প্রবন্ধাদি দ্বারা সাধারণকে এবিষয়ে জ্ঞানদান করিতে পারেন। ময়রা যাহাতে প্রকাশ্যভাবে বিশুদ্ধ তৈলের অথবা ঘৃতমিশ্রিত তৈলের খাবার বেচিতে পারে তাহার ব্যবস্থা আবশ্যক। এইরকম খাবার ঘনীকৃত তৈলের অথবা খারাপ ঘিএর খাবার অপেক্ষা কোনও অংশে নিকৃষ্ট নয়। ঘি খাইব, অভাবে অজ্ঞাত-উপাদান ভেজাল দ্রব্য খাইব—লােকের এই মানসতার পরিবর্তন আবশ্যক। ঘি খাইব, না জুটিলে সজ্ঞানে বিশুদ্ধ তৈল খাইব অথবা ঘৃতমিশ্রিত তৈল খাইব—ইহাই সদ্‌বুদ্ধি।

 কয়েকজন বাঙালী রসায়নবিৎ ঘনীকৃত তৈল উৎপাদনে অভিজ্ঞতা লাভ করিয়াছেন। যদি তাঁহাদের চেষ্টায় এদেশে ইহার উৎপাদন হয় তবে ধর্মহানির আপত্তি থাকিবে না। যতদিন তাহা না হয় ততদিন ক্ষমতায় কুলাইলে ঘি খাইব, অথবা সর্ষপ তিল চীনাবাদাম বা নারিকেল তৈল খাইব, অথবা ঘৃত ও তৈল মিশাইয়া খাইব, রুচিতে না বাধিলে স্বদেশী চর্বিও খাইব, কিন্তু বিদেশী ঘনীকৃত তৈল পূতনার স্তন্যবৎ পরিহার করিব।

১৩৩৭