পাতা:লণ্ডনে স্বামী বিবেকানন্দ - মহেন্দ্রনাথ দত্ত.pdf/১৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
লণ্ডনে বিবেকানন্দ

একটি কলম দিলেন। এই কলমটী স্বামীজীকে আমেরিকায় উপহার-স্বরূপ একজন দিয়াছিলেন। আঙ‍্টি তে যে রকম সাদা ডোরা কাটা নীলপাথর থাকে, সেই রকম পাথরের হাতল এবং নিব ও নিব বসাইবার স্থানটি সোণার। কলমটী খুব মূল্যবান্ ছিল। বর্তমান লেখক সেই কলমটী তাঁহার ছোটভাইকে(বর্ত্তমানে ডাঃ ভূপেন্দ্রনাথ দত্ত এম, এ, পি,এইচ, ডি) ডাকযোগে পাঠাইয়া দেন, কিন্তু দুর্ভাগ্যবশতঃ ডাকওয়ালাদের হাত হইতে তাহা আর পাওয়া যায় নাই।

 বর্ত্তমান লেখক তখন অল্পদিন মাত্র লণ্ডনে গিয়াছেন। বিস্তৃত সহর, স্বতন্ত্র আচার-ব্যবহার, স্বতন্ত্র ভাবগতিক। বিদেশের এই সমস্ত ব্যাপার দেখিয়া বর্তমান লেখক একটু আশ্চর্য্যান্বিত হইয়া একদিন পদচারণ করিত করিতে Cheap-side চীপসাইড নামক পল্লীর দিকে যান। কলিকাতায় যেমন বড় বাজার কারবারের প্রধান স্থান লণ্ডনের চীপসাইড এবংতন্নিকটস্থ স্থানগুলিও সেইরূপ কারবারের কেন্দ্রস্বরূপ। অতিশয় জনাকীর্ণ। জনতা অধিক যে ধীরে ধীরে পদবিক্ষেপ করিয়া অগ্রসর হইতে হয়। যাওয়া আসার জন্য সর্ব্বদাই যেন লোকসমূহ চাপ্-জমাট হইয়া দাঁড়াইয়া রহিয়াছে। এমন কি বৃষ্টি বা রৌদ্র হইলে ছাতা খুলিবার উপায় নাই, তাহা হইলে ছাতাটা অপরের মাথায় লাগিয়া যাইবে এবং ছাতা খুলিবারও আদৌ স্থান নাই। কলিকাতায় মেলা বা উৎসব উপলক্ষে কখনও কখনও যেরূপ লোকসমাগম হইয়া থাকে, এই সিটি অব লণ্ডনে বেলা ১০টা থেকে ৫টা পর্যন্ত ঠিক সেই ভাবের লোক সংবদ্ধ হইয়া থাকে। মোটকথা, যদি জনসমুহের মাথার উপর একখানি তক্তা ফেলিয়া দেওয়া যায়, তাহা হইলে বোধ হয় তাহার উপর দিয়া কয়েক মাইল পরিভ্রমণ করা যাইতে পারে। এই সিটি অব লণ্ডন সমস্ত পৃথিবীর কারবারটী নিজের হস্তে রাখিয়াছে ও চালাইতেছে।