পাতা:লণ্ডনে স্বামী বিবেকানন্দ - মহেন্দ্রনাথ দত্ত.pdf/১৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
লণ্ডনে বিবেকানন্দ

স্বামীজী বর্ত্তমান লেখকের মনের কি ভাব হইতেছিল এবং কয়েক দিন ধরিয়া কি চিন্তা করিয়া ছিলেন, সমস্ত পড়া পুঁথির ন্যায় বলিয়া যাইতে লাগিলেন—কোন ভাবিয়া চিন্তিয়া নয়, স্বাভাবিক ভাবে বলিতে লাগিলেন, এবং প্রত্যেক কথাগুলি সত্য হইয়াছিল। তাহার পরেই পুনরায় নীচেকার বৈঠকখানা ঘরটিতে আসিয়া স্বামীজী বর্ত্তমান লেখককে পুনরায় পূর্ব্বতন বাঙ্গলা দেশের নরেন্দ্র নাথ হইয়া বেশ হাসি তামাসার ভাবে কথাবার্ত্তা কহিতে লাগিলেন এবং সোণার কলমটী দিলেন। যাহা হউক, স্পষ্ট বোঝ গেল যে পূর্ব্বতন নরেন্দ্রনাথ আর নয়, পূর্ব্বদেহে বিবেকানন্দ নামক এক মহাশক্তি প্রবেশ করিয়াছে। এক দেহের ভিতর কখন ৰা কলিকাতার নরেন্দ্রনাথ বাস করেন কখন বা বিশ্ববিজয়ী বিবেকানন্দ বাস করেন। ভাবভঙ্গী, আচার-ব্যবহার, হাত-নাড়া, আঙ্গুল-নাড়া স্বতন্ত্র হইয়া গিয়াছে। কোন কিছু ভাব প্রকাশ করিতে হইলে, বাম হস্তের ৫টা অঙ্গুলি কুঞ্চিত বা বিক্ষিপ্ত করিয়া ভাব প্রকাশ করিতে লাগিলেন, ডান হাত তত সঞ্চালন করিতে লাগিলেন না। কিন্তু প্রত্যেক হস্তসঞ্চালনে বা শিরঃসঞ্চালনে স্পষ্ট, নির্দিষ্ট ও নির্দ্ধরিত ভাব প্রকাশ করিতে লাগিলেন। হাঁ বা না যাহাই হউক না কেন, ভাবগুলি কিন্তু দ্বিধাশূন্য, যেন স্বতন্ত্র লোক, পূর্ব্বে কখনও এভাব তাঁহার ভিতর দেখা যায় নাই। শুধু ইচ্ছা করিলে পূর্ব্বের অবস্থায় নামিতে পারেন এবং পূর্ব্ব অবস্থার স্মৃতি ও ভাবভঙ্গী একটু কষ্ট করিয়া আনিতে পারেন। কিন্তু স্বাভাবিক অবস্থায়ও সব সময় যেন আজ্ঞাদাতা মহাশক্তিমান্ পুরুষ, সমস্ত কথাগুলি যেন hushing commanding voice (দ্বন্দ্বাতীত, আজ্ঞাপ্রদ গম্ভীর স্বর)।

 স্বামীজী বর্ত্তমান লেখককে নিজের পকেট হইতে ৫ পাউণ্ড দিয়াদিলেন এবং কৃষ্ণমেনন‍্কে সঙ্গে করিয়া পাঠাইয়া দিলেন, পথে যাইতে যাইতে কৃষ্ণমেননের সঙ্গে কথা হইতে লাগিল। কৃষ্ণমেনন্ বলিতে