পাতা:লণ্ডনে স্বামী বিবেকানন্দ - মহেন্দ্রনাথ দত্ত.pdf/২৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

লণ্ডনে বিবেকানন্দ শুনাইতে লাগিলেন। কলিকাতার একখানি চিঠিতে লেখা ছিল, “বলরাম বাবুর পুত্র রামকৃষ্ণ ও শ্ৰীযুক্ত তুলসীরাম ঘােষের কন্যা চণ্ডী—উভয়েরই বিবাহ হইয়া গিয়াছে।” এই খবর শুনিয়া স্বামীজী, সারদানন্দ স্বামী ও বর্তমান লেখক তিনজনে খুব আনন্দ করিতে লাগিলেন এবং বলরাম বাবুর অনেক সুখ্যাতি হইতে লাগিল। তারপর সারদানন্দ স্বামী পুনরায় চিঠি পড়িতে লাগিলেন। একস্থানে লেখা ছিল, “রাখাল মহারাজের পুত্র সত্যের মৃত্যু হইয়াছে। ইহাতে রাখাল মহারাজ ( স্বামী ব্ৰহ্মানন্দ) বড় ব্যথিত ও বিষন্ন হইয়া পড়িয়াছেন।” এই খবরটি শুনিয়া সকলে দুঃখিত হইলেন। স্বামীজী বলিতে লাগিলেন, “রাখালের মত এত উচ্চ অবস্থার লােকও পুত্র শশাকে বিহ্বল হয় ! পুত্রশােক কি ভয়ানক জিনিস! মানুষ জগতের সব সহ করতে পারে কিন্তু পুত্রশোক সহ্য করতে পারে না, এত বেশী অধীর হয়ে পড়ে। তাই তাে রাখালের ছেলেটি মারা গেল—ছেলেটা বেঁচে থাকলে তাকে গিয়ে মঠে নিয়ে নিতু। ছেলেটাকে তৈরী করে নিতু। তার কি ব্যামাে হয়েছিল ?” বর্তমান লেখক বলিলেন “ছেলেদের সঙ্গে খেলতে খেলতে সে পড়ে যায় । তাইতে, তার বুকে একটা গোঁজা লেগে পাঁজরা ফুলে ওঠে। সেই থেকে তার হৃৎপিণ্ড বােগ হয় আর সব সময় বুক ধড়ফড় করতাে। রাখাল মহারাজ বর্তমান লেখককে সঙ্গে লইয়া কাসারি পাড়ার সেনেদের বাড়ীতে গিয়ে ছেলেটিকে বােজ দেখে আসতে চিকিৎসাও বেশ হয়েছিল।” রাখাল মহারাজ যে ছেলেটিকে দেখে আসতেন এইকথা শুনিয়া স্বামীজী একটু সুস্থ হইলেন এবং বলিতে লাগিলেন, “যা হউক, রাখাল তো ছেলেটিকে দেখা শুনা করেছে।” কিন্তু শােকের চিহ্ন স্বামীজীর মুখে স্পষ্ট রহিল এবং মাঝে মাঝে সেই কথা তুলিয়া বলিতে লাগিলো, “তাইতাে রাখালের ছেলেটা মারা গেল !” সারদানন্দ স্বামী পুনরায় চিঠি পড়িতে