পাতা:লণ্ডনে স্বামী বিবেকানন্দ - মহেন্দ্রনাথ দত্ত.pdf/২৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

লণ্ডনে বিবেকানন্দ করেছেন এবং টাউন হলের সভাতে তাহারই সব চেয়ে শ্রেষ্ঠ বক্তৃতা হয়েছিল।” ইহা শুনিয়া স্বামীজী বলিলেন, “স্থা, এন, ঘােষ একটা পণ্ডিত লােক। সে যে এপক্ষে দাঁড়াইয়াছে এটা ভাল কথা ইহাতে ঢের কাজ হবে।” তাহার পর আমেরিকাতে ধর্মপালের বক্তৃতার কথা উঠিল। স্বামীজী বলিতে লাগিলেন, “আরে ধর্মপালটা প্রতিনিধি হয়ে গেল, পড়া- শুনা বিশেষ কিছু করে নাই, সে তাে গিয়ে এক লেচারের সরঞ্জম করলে। দেখলুম্ কিছুই জানে না, তখন আমি কি করি, বুদ্ধ তাে আমাদেরও একজন অবতার, সেইজন্যে নিজে কোমর বেঁধে লেগে গেলুম আর বুদ্ধ কথা লােককে বলুম।” কারণ স্বামীজী বক্তৃতায় একস্থানে বলিয়াছিলেন “আমি বৌদ্ধ নহি-কিন্তু আমি বুদ্ধ হতে চাই। চীন, জাপান ও সিংহল সেই লােকগুরু বুদ্ধের উপদেশ অনুসরণ করতে পারেন, কিন্তু ভারত তাঁহাকে ঈশ্বরাবর বলে পূজা করেন।” এইরূপ সরলভাবে হাসি তামাসাচ্ছলে অনেক কথাবার্তা হইতে লাগিল। ঘরের দেওয়ালে একখানি ছবি ছিল। ছবিটি হইতেছে একটি ১৩১৪ বৎসরের মেয়ের,চুল এলিয়ে, ঘঁটু উচু করে পা ছড়িয়ে চরকার সূতা কাটিতে কাটিতে সূতাটি ছিড়িয়া গিয়াছে, আর মেয়েটি মাথা হেঁট করিয়া নিজের হাঁটুতে মাথাটা যেন দেবীর মত করিয়াছে এবং পা দুটি লম্বা করিয়া ছড়াইয়া বসিয়া পড়িয়াছে। ছবিটির তলায় লেখা ছিল “Hope Deferred” অর্থাৎ আশা-ভঙ্গ। স্বামীজী দেওয়ালের সেই ছবিটির দিকে দৃষ্টিপাত করিয়া বলিতে লাগিলেন, “মানুষের আশা যতক্ষণ থাকে ততক্ষণ সে ঘাড় উচু করে, হাত পা সংযত করে, প্রফুল্ল-মনে বসে থাকে, কিন্তু আশাটি নষ্ট হলে আর যেন হাত পায়ের জোর থাকে না, হাত পা এলিয়ে পড়ে। ছবিখানা বেশ ভাবটা প্রকাশ করেছে, মানুষের জীবনেও ঠিক এইরূপ ভাব হয়ে থাকে।” এইরূপ কথাবার্তা কহিয়া স্বামীজী সারদানন্দ স্বামীকে বলিলেন, “না, থ