পাতা:লণ্ডনে স্বামী বিবেকানন্দ - মহেন্দ্রনাথ দত্ত.pdf/৩৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

লগুনে বিবেকানন্দ নানারকম পাখী ডাকিতেছিল তাহাদের কথা তুলিয়া ভারতবর্ষের পাখীর ডাকের সহিত তুলনা করিতে লাগিলেন। কিন্তু তখন পর্যন্ত তিনি যেন নিজের ভাবটা অনেক কষ্টে সকলের নিকট হইতে লুকাইবার চেষ্টা করিতেছেন। মাঝে মাঝে চোখ হইতে তীব্র দৃষ্টি অগ্নিস্ফুলিঙ্গের মত বাহির হইতেছিল। বেশ স্পষ্ট বােঝা যাইতেছিল যে স্বামীজীর ভিতরে এক ভাব বহিতেছিল কিন্তু বাহিরে কথাবার্তার দ্বারা সে ভাব চাপিয়া রাখিবার চেষ্টা করিতেছিলেন। স্বামীজীর সেই দিনের কথাবার্তা শুনিয়া সকলেই স্থির হইয়া বসিয়া রহিলেন—কাহারও কোন কথা কহিবার সামর্থ্য ছিল না। তারপর মিস্ মূলারের উঠানে বা-দিকে যে একটি লতাকুঞ্জের মত ছিল সেখানে সকলে যাইয়া সান্ধ্য-আহারে বসিলেন। প্রথমে দিয়াছিল দুধ দিয়। মােটা মােটা ম্যাকরণি (inacaroni) সূপ, তাহাতে মুন দেওয়া ছিল। সারদানন্দ স্বামী দু’এক চাচে খাইয়া মুখ বিটকেল করিয়া ন্যাকার করিবার মত করিলেন। সারদানন্দ স্বামী নূতন লােক, কি করিয়া থানাখানি কাৎ করিয়া ধরিতে হয় এবং চাচে কিরূপভাবে ধরিয়া তাহার উপর খাদ্যদ্রব্য তুলিয়া লইতে হয়, চামচের কোনদিকে মুখ দিতে হয়, সে সব বিষয় তখন কিছুই তিনি জানিতেন না। স্বামীজী মৃদুভাবে সাৱদানন্দ স্বামীকে ইসারা করিয়া বাংলায় বলিতে লাগিলেন, “ওরে শরৎ, ও রকম করে ধরে না। আমি যেভাবে ক’ছি সে রকম ক।” অর্থাৎ প্লেট অপরদিকে বেঁকিয়ে ধরিতে হয়, সম্মুখের দিকটা উচু করিলে মাথার দিকটায় সব তলার জিনিস জমা হয়। চামচেটা তলার দিক থেকে হেলাইয়া সূপটা লইতে হয় এবং মুখে দেবার সময় চাচের পাশ দিয়া লইতে নাই, ভগার দিক দিয়া লইতে হয়। চাচেটা পরিবার সময় গােড়ার দিক ধরিতে নাই, মাঝখানে ধরিতে হয়। ভারতবর্ষের হস্ত সঞ্চালন ও দিক্‌ নিৰ্ণয়ের