পাতা:লাজুকলতা - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১২১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

হর্ষনাথ বলেছিল, ‘স্বদেশী না ছাই ! জেলে যেত না স্বদেশী করলে ? ওসব টাকা উপায়ের ফিকির । ছেলেদের নিয়ে দলটিল সমিতিটমিতি করে চাঁদা তুলবার জন্যে । মাস্টারিতে কি কারও পেট চলে ?” শহরতলিতে সূৰ্য্যপন্দর বাড়ি । এক রাত্রির বেশী হর্যনাথ থাকতে পারে নি। তার কত কাজ ধনেশগঞ্জে। সূৰ্য্যপদকে সব জানিয়ে অনুরোধ করেছিলে, “ছেলেটাকে তোমার মানুষ করে দিতে হবে ভাই । শুধরে দিতে হবে।” সূৰ্য্যপদ হেসে বলেছিলেন, ‘দেব । ছেলেকে তোমার মানুষ করে cद ।' একটা সর্ত করেছিল সূৰ্য্যপদ যে, এক বছরের মধ্যে রমেনকে ধনেশগঞ্জে নেওয়া চলবে না। আর সোজাসুজি রমেনকে টাকা পাঠানো চলবে না । হর্ষনাথ রাজি হযে ফিরে গিয়েছিলেন । রমেনের খরচের জন্য পঞ্চাশ টাকা দিতে চাইলে সূৰ্য্যপদ মোটে পাঁচিশ টাকা নিয়েছিল । বলেছিল, “আমি গরিব মাস্টার, তোমার ছেলের খরচ চালাবার ক্ষমতা আমার নেই। কিন্তু পাচিশ টাকার বেশি খরচ ওর লাগবে না ।” পরের মাসে হর্ষনাথ, পঞ্চাশ টাকা পাঠিয়েছিল । কয়েকদিন পরে পাঁচিশ টাকা ফেরত আসায খুশি হয়ে রমেনের মাকে বলেছিল, 'না, লোকটা সত্যি ভালো । ছেলেটাকে শুধরে দিতে পারবে বলে मC•ा श्श्न ।' একবছর পরে পূজোর ছুটিতে রমেন বাড়ি এল। তার পরিবর্তন দেখে প্ৰথম ক'দিন হর্ষনাথ পরম খুশি । যেমন চেহারায় কথায় ব্যবহারেও তেমনি সে শাস্তশিষ্ট-ভদ্র হয়ে এসেছে। উস্কো খুস্কো বাকড়া চুল ছোট ছোট করে ছাটা কিন্তু তাও আঁচড়ানো, জামা-কাপড় সস্তা-দামের কিন্তু দিব্যি পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন-মুখখানা >> "