পাতা:লাজুকলতা - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১৫৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

যথা সৰ্ব্বস্ব খরচ করে মেয়েটাকে ওর হাতে তুলে দিয়েছিল। বিয়ের পরেও তিনি চার বছর টের পাওয়া যায় নি। টাকা পয়সা স্বভাব চরিত্র কি রেটে সে উৎসন্ন দিতে বসেছে, বিসর্জন দিচ্ছে মনুষ্যত্ব। টের পাবার পর মোটে দু’বছর লেগেছে চরম অবস্থায় পৌছতে। স্বাস্থ্য গেছে, চাকরী গেছে, একে একে রাধার গয়না গেছে-সব চেয়ে দামী যে আত্মীয় বন্ধু দশজনের বিশ্বাস, তাও গেছে। সবাই হাল ছেড়েছে, তারা ছাড়তে পারে নি। সকলকে ঠকানো \থেকে চুরি চামারি পর্য্যন্ত শুরু করেছে জেনেও আশা ছাড়া যায় নি। হয় তো এ বোক কেটে যাবে। হয় তো চৈতন্য হবে । কিন্তু কপালটাই মন্দ যে-মেয়ের, তার স্বামীর বেলা কি আর সে অঘটন ঘটে ? যে মানুষ ছিল সে অমানুষ হলেও আবার মানুষ হয় ? রাধার সব যাওয়ার পর তাকে আর ছেলেমেয়ে দুটিকে সমীর আবর্জনার মত ফেলে গেছে। এখানে। তবু তাদের রেহাই দেয় নি। সে ধূর্ত। সে টের পেয়েছে তাদের এই নিরূপায় আশা-হয় তো সে শুধরে যাবে। এখন তো সে হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছে এ পথে কত সুখ। বাড়ীতে গেলে আত্মীয় বন্ধু কুকুরের মত দূর দূর করে তাড়িয়ে দেয়। বন্দ উপায়ে কোন রকমে দুটো পয়সা হাতে এলে বন্দ খেয়ালে দু'দিনে তা উড়ে যায়, আবার সম্বল করতে হয় রাস্ত। এবার হয় তো সে নিজেকে সংশোধন করবে। যতদিন এই আশাটুকু বজায় রাখা গেছে, মাঝে মাঝে এসে নানা ছুতায় দশ পনেরোটা করে টাকা বাগিয়ে নিয়ে গেছে। সমীর। তার এই অমানুসিক নির্লজ্জতাই অবশেষে একেবারে শেষ কৰে দিয়েছে তাদের শেষ আশাটুকু। পরের বার সমীর এলে বাইরে দরজা থেকেই তাকে বিদায় করে দিতে হয়েছে । S & A,