পাতা:লাজুকলতা - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৩০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সে সরলভাবে বলে, আপনার ধারটা নিশ্চয় দেব শরৎদা, দু’এক মাসের মধ্যে দেব। বৌদি ছেড়া কাপড় পরে আছে আজ দেখেছি। কদ্দিন বাদে রায়বাবুদের ওই পুকুরের কোণায় পেয়ারা গাছে উঠেছি, বৌদি এসে বললে, আমায় দু'টো পেয়ার দেবে ? দেখলাম শাড়ীটা নশো জাগায় ছিড়ে গেছে। --নশো জাগায় সেলাই হয়েছে। রতন দুটো সিগারেট কেনে। একটা সযত্নে পকেটে রেখে একটা ধরিয়ে জিজ্ঞাসা করে, আমার টাকা কটা বাকী আছে বলেই কি বৌদিকে একটা শাড়ী দিতে পারছি না। শরৎদা ? এভাবে যে কথা বলে ব্যবহার করে, পনেরটা টাকা বাকী আদায়ের জন্য তাকে কি গাল দেওয়া যায় ? যাদবদের মত শাসিালে লোকদের কাছে সে যখন দেড়শ’ দু’শ টাকা বাকী আদায়ের জন্য সবিনয়ে সসঙ্কোচে ভিখারীর মত দরজায় গিয়ে দাড়ায়, দেখা হবে না। শুনেও রাগ না করে ফিরে আসে ? দোকান বন্ধ করে সে ; যখন বাড়ী ফেরে, পাড়ার ঘরে ঘরে ঘুম তখন ঘনিয়ে এসেছে, তার তিনটি ছেলেমেয়ে অচেতন হয়ে গেছে ঘুমে। শিবানীও হাই তুলছে ঘন ঘন। শিবানীর পরনে সত্যই ছেড়া কাপড়, মাধব মিছে বলে নি । মনোহারী মণিহারী দোকান করতে তার গয়নাগুলিও লেগেছে, তার শুধু ছেড়া শাড়ী দিয়ে লজ্জা নিবারণের সমস্যা নয়। শিবানী বলে, এখন খাবে ? শুকনো রুটি আর ছেচকি তো ? খাব’খন। তুমি এতক্ষণ কি করছিলে ? শিবানী মুখ বাকায়। কি আবার করব ? ওরা খানিকক্ষণ পড়ল, তারপর খেয়েদেয়ে R