পাতা:লাজুকলতা - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৫৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মা এতক্ষণ কথা বলে নি! তার মুখের হাসি আর চোখের গর্বতর চাউনিতেই নীরেনের প্রাণ ভরে গিয়েছিল। তবু সে অনুযোগ দিয়ে বলে, তুমি তো কিছু বললে না মা ? কি আবার বলব ? আমি জানতাম তুই পাশ করবি। আমার গয়না ধার নিয়েছিস, পাশ করে শোধ দিবি না ! সকলের সামনে তার গয়না বিক্রীর কথা বলায় নীরেন ক্ষুব্ধ হয়। সত্য সত্যই একদিন সে কি শোধ দেবে না মায়ের গয়না, নিজের ভবিষ্যৎ গড়ে নিতে পারলে মায়ের সুখের ব্যবস্থা করবে না। সকলের আগে ? আজকের বিশেষ দিনটিতেও গয়না দিতে হওয়ার কথাটা মা পৰ্য্যন্ত ভুলতে পারে না । যেটুকু আনন্দ আর উত্তেজনা জেগেছিল বাড়ীতে তার পাশ করার খবরে, এত কষ্টে তাকে পাশ করানোর জন্যে, কত তাড়াতাড়িই সেটা ঝিমিয়ে নিস্তেজ হযে এসে একেবারে ফুরিয়ে যায় । নীরেন ভেবেছিল, প্ৰাণেশ ভেতরে এলে তার ভবিষ্যৎ নিয়ে এক চোট জল্পনা কল্পনা চলবে । কিন্তু প্ৰাণেশ ঘরে এসে সটান বিছানায় শুয়ে পডে, ছেলের সম্পর্কে তার কথা বলবার কোন উৎসােহই আর দেখা যায় না। তার মা বলে, সুজনবাবু কি বলল ? মাইনে বাডিয়ে দেবে ? প্ৰাণেশ বলে, আজ তো শুধু টোকেন স্ট্রাইক হল। এরপর কি হয় Cथ शांक । তাই বটে ! পাশফেলের চিন্তায় মাসগুল হয়ে থেকে নীরেন ভুলেই গিয়েছিল যে তার রেজাল্ট জানার আগ্রহে প্ৰাণেশ আপিস কামাই করে নি, আজ তাদের আপিসে ষ্টাইক। কিন্তু তাই বলে তার বিষয় কথা বলা কি বারণ ? আজও শুধু দেনা আর সংসারের অভাব অনটনের কথাই হবে দু’জনের মধ্যে ? রেখা আজি 8.