পাতা:লাজুকলতা - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

যেমন ! এরকম উদ্ভট খাপছাড়া রকম সকম দেখে কোথায় আরও ভড়কে যাবে, তোমরা খুলী হয়ে উঠলে! বুড়ী সুভদ্রা বলে, তুই বুঝবি নে। তুই কেবল একপেশে বিচার শিখেছিস । খাপছাড়া বটেই তো, এরকম খাপছাড়া লজা কোন বৌয়ের দেখা যায় আজকাল ? কিন্তু একটা খাপছাড়া অবস্থায় পড়েছে বলেই নিশ্চয় এরকম খাপছাড়াভাবে নিজেকে বাচাবার চেষ্টা করছে। তুই তলিয়ে সব জেনেছিস ওদের ভেতরের ব্যাপার ? না। জেনেই চটাং চটাং কথা কইছিস। আমরা টের পেয়েছি তাই আমরা বলছি, বেশ করছে। কি টের পেয়েছে ? সে তুই বুঝবি নে, অত কথায় তোর কােজ নেই। যতীনের অনেকদিন চাকরী নেই খবর রাখিস ? দেখায় যেন চাকরি করে, কিন্তু আমরা টের পেয়ে গেছি। সাধে কি ঘর ছেড়ে বন্ধুর বাড়ী ঘর ভাড়া নিয়েছে ? সেখানে ভাড়া বাকী পড়লে মালপত্র আটক রেখে খেদিয়ে দিত । বন্ধু তো আর তা পারবে না। মানুষটা মরিয়া হয়ে উঠেছে --বৌটা নিজেকে বাচিয়ে চলবে না ? সুমায়া হঠাৎ যেন বিদ্যুতের ঝালকানি চেয়ে দেখেছে এমনিভাৰে চোখ পিট পিট করতে করতে বলে, ও । যতীন একটু ঝাঁঝালো হাসির সঙ্গেই বলে, ভবেশৰাবুর মা ডেকে তোমার প্রশংসা শোনালেন। তোমার মত খাটি বৌ নাকি পাড়াতে আর নেই। তা, কথাটা সত্যি। ওনার নাতি-বৌয়ের সঙ্গে তুলনা করলে সত্যি তোমার তুলনা মেলা ভার। কালো টানা চোখ তুলে ঝিল্লিক মেরে চেয়েই তমাল চোখ নামায়। পাতলা ঠোঁটের অপূর্ব কারসাজিতে একটু রহস্যময় হাসিরও বিলিক খেলিয়ে দেয় ।