পাতা:লালন শাহ ও লালন গীতিকা.djvu/১৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

| 5 | দৃষ্ট-গোচরে আনবার কোশেশ করেন। তার উদ্দেশ্য সফল হয়, লালনের অসাধারণ রস-সৃষ্টি ও কবিত্বশক্তি আমাদের সুধী মহলেও জনপ্রিয় হয় । প্রশ্ন হতে পারে, রবীন্দ্রনাথ কি এই তথাকথিত ‘বাউল তত্ত্ব’ সম্পর্কে ওয়াকিফহাল ছিলেন ? হয় ত ছিলেন, কিন্তু বলেছি, সেই তত্ত্ব নিয়ে তিনি মাথা ঘামানোরও প্রয়োজন বোধ করেন নি, কোনো সাহিত্যরসিকই তা করেন না । তবে তত্ত্বরসি কদের জন্ত নিশ্চয়ই তার প্রয়োজন আছে । রবীন্দ্রনাথও তাই এগুলি সংগ্রহ ও সংরক্ষণের প্রয়োজন বোধ করেছিলেন । প্রধানতঃ রবীন্দ্রনাথেরই আহ্বানে অনুপ্রাণিত হ’য়ে অধ্যাপক মনসুর উদ্দীন, শ্ৰীবসন্তকুমার পাল প্রমুখ উৎসাহী তরুণগণ তখন থেকেই এই সব হারামণি সংগ্রহে অগ্রসর হন। • কিন্তু আফসোসের বিষয়, অধ্যাপক মনসুর উদ্দীন সাহেবের সংগৃহীত লোক-সংগীত সংখ্যার দিক দিয়ে অধিক ও বৈচিত্র্যপূর্ণ হ’লেও গুণগত বিচারে তার মূল্য খুব উচ্চ মানের নয়। তথাপি বাংলা লোক-গীতি সংগ্রহে তারই দান সর্বাধিক এবং এ বিষয়ে তিনি অন্যতম পথিকৃৎ, এ-কথা স্বীকার করতেই হবে । তার সংগৃহীত লালন-গীতির সংগ্রহও বিশেষ উল্লেখযোগ্য । এখানেও ঐ একই ত্রুটি লক্ষ্যযোগ্য । অধ্যাপক সাহেব লালন-গীতি ংগ্রহে যেমন অধিক উৎসাহী, তেমনি অব-পরোয়। পক্ষান্তরে বসন্ত কুমার বাবু এই শ্রেণীর লোক-সাধক ও কবিদের জীবন-কথা সংগ্রহে উৎসাহী। বলা বাহুল্য, এ ব্যাপারে উভয়েরই দোষ-গুণ প্রায় সমান সমান । ১. ১৩২২ সালের ( = ১৯১৫ ) প্রবাসী পত্রিকায় রবীন্দ্রনাথ 'হারামণি’ নামে লালন শাহের কয়েকটি গান প্রকাশ করেন। পরে তারই দৃষ্টাস্তে অধ্যাপক মনসুর উদ্দীন সাহেব হারামণি’ নামে ক্রমে ক্রমে সাত খণ্ড বৃহৎ লোক-গীতি সংগ্রহ গ্রন্থ প্রকাশ করেন। তার প্রথম খণ্ড রবীন্দ্রনাথের ভূমিকা সহ ক'লকাতা বিষ্ঠালয় থেকে প্রকাশিত হয় ।