পাতা:লালন শাহ ও লালন গীতিকা.djvu/৩০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

( η ) বাউল নামে পরিচিত ব্যক্তিগণকে আমরা মোটামুটি তিন ভাগে ভাগ করতে পারি। ১) আদি বা আসল বাউল ২) মেকি বাউল, ও ৩) সখের বাউল । আসল বাউল অতীতে অনেক ছিলো, হালে এদের সংখ্যা নেহায়েতই অল্প। এদেরকে আবার দুই ভাগে ভাগ করা যায়— একেশ্বর বাদী ও বীজেশ্বর বাদী ( বা নিরীশ্বর বাদী ) ! শেষোক্ত বাউলেরাই আদি বাউল । ডক্টর উপেন্দ্রনাথ কথিত বাউল এরাই । প্রাচীন তান্ত্রিক বৌদ্ধ মতের ধ্বংসাবশেষের মধ্যেই এদের জন্ম। অতীতে নীল রঙের আলখেল্লাধারী একাভিপ্লায়ী’ নামক যৌন-অনাচারী এক শ্রেণীর শ্রমণ-শ্রমণীর কথা জানতে পারা যায়, এরা তাদেরই উত্তরাধিকারী । সাধারণতঃ সহজিয়া বা নেড়ানেড়ী নামে পরিচিত। স্বগীয় ডক্টর দীনেশচত্র সেনের ভাষায় : “( এরা ) প্রাচীন পতনোন্মুখ পতিত বৌদ্ধগণের লোক, বৈষ্ণবেরা ইহাদিগকে অনেক উন্নত করিয়াছে’ । ১ এটা কিছুই বিচিত্র নয় যে, পরবর্তীকালে এদেরই একটি শাখা ইসলাম গ্ৰহণাস্তর মুসলিম-সমাজেও তান্ত্রিক ব্যভিচার অন্য নামে চালু করে থাকবে । তবে লালন শাহী ফকীর সম্প্রদায় যে এদের অনেক উধের্ণ ছিলেন, আশা করি, সে কথা আর নতুন করে বলার দরকার হবে না । একেশ্বর বাদী বাউলের সংখ্যাই এ দেশে বেশী এবং তারা সকলেই বে-শর বা শাস্ত্রশাসন-বহিভূত বাউল নয় । লালন শাহী বাউলের এই সমাজের। এরা মূলতঃ সুফী মতাবলম্বী। বিশ্বনবী রসূলুল্লাহই (দঃ } এদের জীবনাদর্শ। এদের মতে, তিনিই একমাত্র ইনসানুল কামিল’ বা পূর্ণ মানবত্বের আদর্শ। লালন বনে— ১. বৃহৎ বঙ্গ : ডক্টর দীনেশচন্দ্র সেন, ১ম খণ্ড, কলিকাতা, পৃঃ ৩২৫