পাতা:লিঙ্গপুরাণ (পঞ্চানন তর্করত্ন).pdf/৫৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

$8. ত্রিংশ অধ্যায় । শৈলাদি বলিলেন, তৎকালে ব্ৰহ্মা ব্রহ্মর্ষিগিকে এইরূপ কথা বলিলে, তাহারা পবিত্র শ্বেতমুনির কথা জিজ্ঞা করিলেন । পিতামহ বলিলেন;–াহে দ্বিজগণ! বুদ্ধতম স্ত্রীমান শ্বেতনামা মহামুনি নমস্তে রুদ্রমন্তবে ইত্যাদি পবিত্র রুদ্রাধ্যায়োক্ত মন্ত্র দ্বারা সমাসক্ত মনে ভক্তিপূৰ্ব্বক পূজা করত মহাদেবকে পরিতুষ্ট করিয়াছিলেন। হে বিপ্রেত্ৰগণ । তার পর মহাতেজ যম শ্বেত মুনির মৃত্যুকাল উপস্থিত হইস্থাছে মনে করিয়া অঁহার নিকটে আগমন করিলেন। গতায়, পুণ্যাত্মা শ্বেতমুনি তঁহাকে অরলোকন করিয়া ধ্যান করত যহাদেবের পুজা করিলে মৃত্যু আমার কি করিবে, এই মনে করিয়া যশস্বী পুষ্টিবৰ্দ্ধন মহাদেবকে পূজা করিলেন। লোকভয়ঙ্কর ষম, তাহাকে দেখিয়া হাসিতে হাসিতে বলিলেন;–এস, এস ; শিবপুজায় তোমার কোন ফল হইবে না। হে দ্বিজোত্তম! আমি র্যাহাকে অধিকার করিয়াছি, ব্ৰহ্মা, বিষ্ণু, মহেশ্বর কেহই র্তাহাকে পরিত্রাণ করিতে সমর্থ হইবেন না। এ বিষয়ে আমিই প্রভু ; যাহাকে ক্ষণকালমধ্যে যমালয়ে লইয়া যাইতে উদ্যত হইয়াছি, তাহার রুদ্রারাধনায় কি হইবে ? হে মুন ! তোমার মৃত্যুকাল উপস্থিত হইছে, এইজন্তই তোমাকে লইয়া বাই উদ্যত হইয়াছি। ১—১। মুনিদত্তম, তাহার সেই ধৰ্ম্মমিশ্রিত ভয়ঙ্কর বাক্য শুনিয়া, হ রুদ্র ! হা মহাদেব ! এই বলিয়৷ বিলাপ করিতে আরম্ভ করিলেন। “শ্বেতমুনি নিতান্ত ব্যাধুল হইয়া সজল ও সন্ত্রাস্ত-লোচনে কালদেবকে অবলোকনপুৰ্ব্বক বললেন;–যদি আমাদিগের স্বামী মঙ্গলময় দেবদেব বৃষধ্বজ রুদ্র এই লিঙ্গে বর্তমান থাকেন, তাহা হইলে কাল! তুমি কি করিতে পার ? হে মহাবাহো! মদ্বিধ মহাত্মাও নিতান্ত শিবানুরাগীদিগের প্রতি তোমার ঈদৃশ চেষ্টাতে শেন ফল হইবে না। পাশার ভয়ঙ্কর ধম, শ্বেত মুনির সেই বাক্য শ্রবণ করত ভয়ঙ্কর সিংহনাদ করিয়া গতায়ু মুনিকে বন্ধন করিা পুনঃপুনঃ বলিলেন;– হে রিপ্রবে। যমালয়ে লইঞ্জ যাইবার জন্ত তোমাকে এখন বন্ধ করিলাম; দেবদেব রঞ্জ তোমার কি করিলেন । কোথায় শিং, কোথায় বা তোমার তাশ ভক্তির ফল ? তোমার পূজা বা পুজার ফলই বা কোথায় এ জায় জমিই , বা কোথায় ? হে শ্বেত । স্থার কি গুৰু আছে । আমি তোমাকে বন্ধ লিঙ্গপুরাণ । করিলাম। হে শ্বেত! যদি এই লিঙ্গস্থ মহাদেব রুদ্র, তোমাকে রক্ষার জন্ত কোন চেষ্ট না করেন, তবে তাহাকে পূজা করিয়া কি হইবে ? তার পর স্মরারি সদাশিব ব্র্যম্বক মহাদেব, ব্রাহ্মণ-হননার্থ আগত ৰমকে যমালয়ে প্রেরণ করিবার জন্ত সকলের বিস্ময় উৎপাদন করিয়া পাৰ্ব্বতী, নদী ও প্রমথাধিপগণের সহিত সত্বর নির্গত হইলেন। বলবানূ যম । মহাদেবকে দর্শন করিয়া ক্ষণকালমধ্যেই ভয়ে প্রাণ ত্যাগ করিয়া মুনিসন্নিধানে পতিত হইলেন। ১০-২১ । হে জিসত্তমগণ! উচ্চমতি শ্বেতমুনি মহাদেবের নিরীক্ষণ মাত্রে অবলোকন করিয়া উচ্চৈঃস্বরে নিনাদ করিলেন। প্রধানতম দেবগণের নিনাদ করিতে আরস্ত করলেন। মহর্ষিগণ আস্থলাদিত হইয়া মহাদেব ও মহাদেবী উমাকে প্রণাম করিলেন । খেচরগণ মহাদেব ও শ্বেতমুনির মস্তকোপরি আকাশ হইতে সুশোভন ও সুশীতল পুষ্পকর্ষণ করিলেন। শ্বেত্তমুনি তখন অস্তষ্ককে মৃত দেখিয়া নিতান্ত বিম্মিত হইলেন। শৈলাদি শিবালুচর নদী, শঙ্কর মহাদেবকে প্রণাম করিয়া বলিলেন যে, “চঞ্চলমতি যম মরিয়াছে, আপনি মুনির প্রতি প্রসন্ন হউন।" তদনন্তর ভগবান মহাদেব শ্বেতমুনিকে অনুগ্রহ করিয়া এবং যমকে ক্ষণকালমধ্যে মৃত দেখিয়া লিঙ্গমধ্যে প্রবেশ করিলেন। অতএব হে দ্বিজগণ! মুক্তিদ ও সৰ্ব্বমুখপ্রদ মৃত্যুঞ্জয়কে ভক্তিপূৰ্ব্বক পূজা করা কৰ্ত্তব্য। আর বহুবাক্যব্যয়ে প্রয়োজন নাই, তোমরা সন্ন্যাসী হইয়া ভক্তিপূর্বক মহাদেবকে পূজা করিলেই শোকমুক্ত হইবে। ২২-২৯ । শৈলাদি বলিলেন, ব্ৰহ্ম ব্রাহ্মণগণকে এইরূপ বলিলে তাহার বলিলেন, হে দেব ! কিরূপে তপস্যা, যজ্ঞ বা ব্ৰত দ্বারা পিনাকী রুদ্র দেবদেব মহাদেবে ভক্তি এবং দ্বিজগণ শিবভক্ত হইতে পারে, অনুগ্রহ করিয়া বলুন। ব্ৰহ্মা বলিলেন;–হে মুনিদত্তমগণ। দান, তপস্তা, বিদ্যা, যজ্ঞ, হোম, ব্রত, বেদধ্যয়ন, যোগশাস্ত্রালোচনা বা ইক্রিয়সংযম দ্বারা ভক্তি উৎপন্ন হয় না, কেবল চিত্তপ্রসন্নত স্বারাই পরম কারুণিক মহাদেৰে ভক্তি উৎপন্ন হয়। অনস্তুর মহর্বি সকল তাহার বাক্য শ্রবণ করিয়া পুত্র ও ভাৰ্য্যাগণের সহিত ব্ৰহ্মাকে প্রণাম করিলেন। অতএব পাশুপতীভক্তি ধৰ্ম্ম-অৰ্থ-কামাদি প্রদান করে এবং মুনিগণ সেই ভক্তিপ্রভাবে বিজয় লাভ ও সৰ্ব্ববিধ মৃত্যু জয় করিতে সমর্থ হন। পূৰ্ব্বকালে দধীচমুনি অমরগণের সহিত বিষ্ণু হরিকে জয় করিয়া ফুপরাজকে পরীক্ষাত করিয়াছিলেন এবং বাস্থিত্ব প্রাপ্ত হন। আমিও মহাদেবের গুণ গান করির মৃত্যুজয় হইয়াছি।