পাতা:লিঙ্গপুরাণ (পঞ্চানন তর্করত্ন).pdf/৬৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পূৰ্ব্বভাগ । হে সৰ্ব্বদেশনময়ত ! সৰ্ব্বজ্ঞ ভগবান সহস্রাক্ষ ! হে জগন্নাথ শচীপতে শত্রু ! মহেশ্বর পদ্মযোনি কিরূপ ঘুগুধৰ্ম্ম করেন, সম্প্রতি সেই বিষয় সকল এই প্রণত ব্যক্তিকে উপদেশ প্রদান করুন। শৈলাদি বলিলেন, সেই মহাত্মা শিলাদের তাদৃশ বাক্য শ্রবণে ভগবান শক্ৰ যথাদৃষ্ট যুগধৰ্ম্ম বিস্তার করিয়া বলিতে আরম্ভ করিলেন। ১-৪। প্রথম সত্যযুগ, দ্বিতীয় ত্রেত তৃতীয় দ্বাপর ও চতুর্থ কলিযুগ জানিবে, এই কৃতাদি যুগ চতুষ্টয় সংক্ষেপে কথিত আছে। সত্যযুগ সত্ত্বগুণময়, ত্রেতা পুজোময়, দ্বাপর রজোগুণময় ও তমোগুণময় এবং কলি মাত্র তমোময়। ইহাই চারিযুগের যুক্তি। সত্য যুগে ঈশ্বরধ্যানই প্রধান, ত্রেতায় যজ্ঞ প্রধান, দ্বাপরে, ভজন এবং কলিযুগে মাত্র দানই প্রধান। দিব্য চারিসহস্র বৎসর সত্যযুগের পরিমাণ,তাহার সন্ধ্য। পরিমাণ দিব্য বৎসরের চারিশত বৎসর এবং সন্ধ্যাংশের পরিমাণও সেইরূপ চারশত বৎসর। হে শিলাদ ! সত্যযুগে এই ভারতভূমে প্রজাগণের মনুষ্যমানে চারিসহস্ৰ বৎসর পরমায়ু ঐ কৃতযুগে সন্ধ্যাংশ গত হইলেও সমস্ত যুগ্ধৰ্ম্মের একপাদ মাত্র অবশিষ্ট থাকে। সৰ্ব্বোত্তম ক্রেতাযুগের পরিমাণ সত্যযুগের চরিভাগের একভাগ ম্যন (অর্থাং দিব্যপরিমাণ তিন সহস্র বৎসর ) দ্বাপরের সত্য যুগের অৰ্দ্ধ পরিমাণ (অর্থাৎ দুই সহস্ৰ বৎসর ) এবং কলির পরিমাণ তাহার অৰ্দ্ধ, (অর্থাৎ এক সহস্র ধংসর ) এবং ঐ ত্রেতাদি যুগের যথাক্রমে সন্ধ্যাপরিমাণ ঐ রূপ দিব্য পরিমাণে তিনশত বৎসর ; দুই শত বৎসর ও এক শত বৎসর এবং সন্ধ্যাংশের পরিমাণ যুগে যুগেও ঐ রূপ যথাক্রমে জানিবেন। ঐ ত্রেতা, দ্বীপর, কলির সন্ধ্যা ও সন্ধ্যাংশের পরিমাণ সহিত যথাক্রমে পরিমাণ দিব্যমানে তিন হাজার ছয় শত বৎসর, দুই হাজার চারি শত বৎসর ও একহাজার দুইশত বৎসর পরিমাণ। ৫-১২ আদি সত্যযুগে সনাতন ধৰ্ম্ম চতুষ্পদ ছিল, ত্রেতাযুগে ত্রিপাদ দ্বাপরে দ্বিপাদ ও কলিঙে মাত্র একপাদ, তাহাও ক্রমে হ্রাস পাই কেবল সত্তামাত্রই পরে অধিষ্ঠান করিয়া থাকে। সত্যযুগে স্ত্রীপুরুষের উৎপত্তি, জীবনোপায়ে নানাবিধ মধুস্থাদি রসের প্রাচুর্ভাব অর্থাৎ সত্যযুগে প্রজার ধখন যে রস লাতে ইচ্ছা করিত, তখন তাহাই পাইত এবং ঐ সত্যযুগে প্রজাগণের নিযুত তৃপ্তি, নিয়ত, আনন্দ ও প্ৰজাগণg"সর্বদাই ভোগী খান্ধিত। সেই প্ৰজাগণের উক্ষমতা অধমত ইত্যাদি ইণ্ডরবিশেষ ছিল । সকলের সমান আয়ুঃ সুন্দর রূপ ও ● ● সকলেই অবিনশ্বর ভাবে সুখে ছিল । তাহাদিগেব সৰ্ব্বদাই তৃপ্তি থাকিও, কখনও শীতোষ্ণশ্বিন্ধুজন্ত ক্লেশ হইত না, কাহারও দ্বেষ ছিল না, এবং পরিশ্রম কাহাকে বলে, তাহাও জনিত না। গৃহ তাহাদিগের আশ্রয় ছিল না, নিরস্তুর পর্বতে পৰ্ব্বতে সমুদ্রে সমুড়েই বাস করিয়৷ বেড়াইত। শোকের লেশও ছিল না,কেবল তাহারা সত্ত্বময় ছিল। লিঙ্গনে নির্জনে থাকিত, এবং ঐ কৃতযুগে প্রজাগণ নিষ্কাম কৰ্ম্মের অনুষ্ঠান করিত নিত্যই প্রফুল্লমনা থাকিত ; অতএব ঐ সত্যযুগে স্বৰ্গ-নরকনিষ্কান পুণ্যপাপকাৰ্য্যে কাহারও প্রবৃত্তি হইত না। বর্ণাশ্রমের তখন ব্যবস্থা ছিল মা। সাস্কৰ্য্য ছিল মা। কালক্রমে ত্রেতাযুগে রসোল্লাস (অর্থাৎ ইচ্ছানুসারে রস প্রাদুর্ভাব ) বিনষ্ট হয়, যখন তাদৃশ সিদ্ধি বিনষ্ট হইল, তখন অঙ্গ একঞ্জিন্ধি উৎপন্ন হয়। তখন জলের সৃক্ষত বিনষ্ট হইয়া মেখ উৎপন্ন হয়। সেই স্বনয়িত্ব মেম্ব হইতে বৃষ্টি হইতে লাগিল। সেই বৃষ্টির সহিত পৃথিবীর সংযোগ হইব। মাত্র গৃহলামক বৃক্ষ প্রাচুর্ভূত হয়, প্ৰজাগণের সেই সকল বৃক্ষ হইতে উপভোগাদি বৃত্তি নির্বাহ হইতে লাগিল। সেই ত্রেতাযুগের প্রারম্ভে প্রজাগণ সেই সকল বৃক্ষ হইতে জীবনোপায় নিৰ্ব্বাহ করিতে লাগিল। পরে কালের মহীয়সী শক্তিবলে প্ৰজাগণের ৰুদ্ধবিপৰ্য্যয় উপস্থিত হইয অকস্মাং রাগমোহময় ভৰু উৎপন্ন হয়। কালপ্রভাবে তাহাদগের বুদ্ধি, হওয়াতে তখন সেই সকল গৃহ-নামক বৃক্ষ বিনষ্ট হইল। সেই বৃক্ষ সকল বিনষ্ট হইলে মৈথুজোদ্ভব প্রজাগণ সত্যপরায়ণ লইয়া সেই সিদ্ধি চিন্তা করিতে লাগিল, পরে প্রজাগণের আবাল সেই সকল গৃহসংজ্ঞক বৃক্ষ আবির্ভূত হইল। ১৩—২৬ । সেই বৃক্ষ সকল প্ৰজাগণের বসন ভূষণ ফল প্রভৃতি প্রসব করিতে লাগিল, ও সেই সকল বৃক্ষ হইতেই প্রজাগণের বর্ণ গন্ধরসান্বিত মহাবীর্ষ্য প্রতিপাত্রপুর্ণ অমাক্ষিক মধু উৎপন্ন হইতে লাগিল; সেই মধুতেই তাহাদিগের মুখ আয়ু প্রভৃতি বৃদ্ধি পাইতে লাগিল । সেই সিদ্ধিবলে তাহারা সৃষ্টপুষ্ট ও জরাথুস্ত হইল। পরে আবার কালক্রমে তাহারা লোভাবৃত হইয়া সেই সকল বৃক্ষ হইতে বন্ধপূর্বক মধু গ্রহণ করিতে আরস্তু করিল। তাহাদিগের তাহাতে লোভকৃত ব্যবহারে সেই সকল কল্পবৃক্ষ মধুত্ব সহিত বিনষ্ট হইতে লাগিল। কালবশে সেই সিদ্ধি অল্পমাত্র অবশিষ্ট থাকিলে, পরে কিছুদিন গত হইলে ঐ ক্রেতাতে শীতোষ্ণাদিছন্দ্ৰভাৰ উৎপন্ন হুইল । তথম প্রজাগণ * লীত