পাতা:লিপিকা-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.djvu/১৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
পায়ে-চলার পথ

 “ওগো পায়ে-চলার পথ, অনেক কালের অনেক কথাকে তোমার এই ধূলি-বন্ধনে বেঁধে নীরব করে রেখোনা। আমি তোমার ধুলোয় কান পেতে আছি, আমাকে কানে-কানে বলো।”

 পথ নিশীথের কালো পর্দ্দার দিকে তর্জ্জনী বাড়িয়ে চুপ করে থাকে।

 “ওগো পায়ে-চলার পথ, এত পথিকের এত ভাবনা, এত ইচ্ছা, সে-সব গেল কোথায়?”

 বোবা পথ কথা কয় না। কেবল সূর্য্যোদয়ের দিক থেকে সূর্য্যাস্তের দিক পর্য্যন্ত ইসারা মেলে’ রাখে।

 “ওগো পায়ে চলার পথ, তোমার বুকের উপর যেসমস্ত চরণপাত একদিন পুষ্পবৃষ্টির মতো পড়েছিল আজ তারা কি কোথাও নেই?”

 পথ কি নিজের শেষকে জানে, যেখানে লুপ্ত ফুল আর স্তব্ধ গান পৌঁছল, যেখানে তারার আলোয় অনির্ব্বাণ বেদনার দেয়ালি-উত্‍‌সব হচ্চে?