বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:লিপিকা-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.djvu/২৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১২
লিপিকা

 এমন সময় নববর্ষা ছায়া-উত্তরীয় উড়িয়ে পূর্ব্বদিগন্তে এসে উপস্থিত। উজ্জয়িনীর কবির কথা মনে পড়ে গেল। মনে হল, প্রিয়ার কাছে দূত পাঠাই।

 আমার গান চলুক উড়ে, পাশে থাকার সুদূর দুর্গম নির্ব্বাসন পার হয়ে যাক।

 কিন্তু, তা হলে তাকে যেতে হবে, কালের উজান পথ বেয়ে বাঁশির ব্যথায় ভরা আমাদের প্রথম মিলনের দিনে, সেই আমাদের যে-দিনটি বিশ্বের চিরবর্ষা ও চিরবসন্তের সকল গন্ধে সকল ক্রন্দনে জড়িয়ে রয়ে গেল, কেতকীবনের দীর্ঘশ্বাসে, আর শালমঞ্জরীর উতলা আত্মনিবেদনে।

 নির্জ্জন দীঘির ধারে নারিকেলবনের মর্ম্মর-মুখরিত বর্ষার আপন কথাটিকেই আমার কথা করে নিয়ে প্রিয়ার কানে পৌঁছিয়ে দিক্‌, যেখানে সে তার এলোচুলে গ্রন্থি দিয়ে, আঁচল কোমরে বেঁধে সংসারের কাজে ব্যস্ত।

 বহুদূরের অসীম আকাশ আজ বনরাজিনীলা পৃথিবীর শিয়রের কাছে নত হয়ে পড়্‌ল। কানে কানে বল্‌লে, “আমি তোমারি।”