বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:লিপিকা-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.djvu/৫০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৩৪
লিপিকা

তোমাকে শ্রাবণের মেঘের মতো কালো দেখেছি, আজ যে দেখি আশ্বিনের সোনার প্রতিমা। সেদিনকার সব চোখের জল কি হারিয়ে ফেলেচ?”

 কোনো কথাটি না বলে সে একটু হাস্‌লে; বুঝলেম, সবটুকু রয়ে গেচে ঐ হাসিতে। বর্ষার মেঘ শরতে শিউলিফুলের হাসি শিখে নিয়েচে।

 আমি জিজ্ঞাসা কর্‌লেম, “আমার সেই পঁচিশ বছরের যৌবনকে কি আজো তোমার কাছে রেখে দিয়েচ?”

 সে বল্‌লে, “এই দেখনা আমার গলার হার।” দেখলেম, সেদিনকার বসন্তের মালার একটি পাপ্‌ড়িও খসে নি।

 আমি বল্‌লেম, “আমার আর ত সব জীর্ণ হয়ে গেল, কিন্তু তোমার গলায় আমার সেই পঁচিশ বছরের যৌবন আজও ত ম্লান হয় নি।”

 আস্তে আস্তে সেই মালাটি নিয়ে সে আমার গলায় পরিয়ে দিলে। বল্‌লে, “মনে আছে, সেদিন বলেছিলে, তুমি সান্ত্বনা চাও না, তুমি শোককেই চাও!”

 লজ্জিত হয়ে বল্‌লেম, “বলেছিলেম। কিন্তু, তার পরে অনেক দিন হয়ে গেল, তার পরে কখন ভুলে গেলেম।”

 সে বললে, “যে-অর্ন্তযামীর বর, তিনি ত ভোলেন