বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:লিপিকা-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.djvu/৬০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৪৪
লিপিকা

 এমন করে বহু যুগ কেটে যায়। হঠাৎ এক সময়ে কোন্ খেয়ালে সৃষ্টিকর্ত্তার কারখানায় উনপঞ্চাশ পবনের তলব পড়্‌ল। তাদের সব-ক’টাকে নিয়ে তিনি মানুষ গড়্‌লেন। এতদিন পরে আরম্ভ হল তাঁর গল্পের পালা। বহুকাল কেটেচে তাঁর বিজ্ঞানে, কারু-শিল্পে; এইবার তাঁর সুরু হল সাহিত্য।

 মানুষকে তিনি গল্পে গল্পে ফুটিয়ে তুলতে লাগ্‌লেন। পশুপাখির জীবন হল আহার নিদ্রা সন্তানপালন; মানুষের জীবন হল গল্প। কত বেদনা, কত ঘটনা; সুখদুঃখ রাগবিরাগ ভালোমন্দের কত ঘাতপ্রতিঘাত। ইচ্ছার সঙ্গে ইচ্ছার, একের সঙ্গে দশের, সাধনার সঙ্গে স্বভাবের, কামনার সঙ্গে ঘটনার সংঘাতে কত আবর্ত্তন। নদী যেমন জলস্রোতের ধারা, মানুষ তেমনি গল্পের প্রবাহ। তাই পরস্পর দেখা হতেই প্রশ্ন এই, “কী হল হে, কি খবর, তার পরে?” এই “তার-পরের” সঙ্গে “তার-পরে” বোনা হয়ে পৃথিবী জুড়ে মানুষের গল্প গাঁথা হচ্চে। তাকেই বলি জীবনের কাহিনী, তাকেই বলি মানুষের ইতিহাস।

 বিধাতার রচা ইতিহাস আর মানুষের রচা কাহিনী, এই দুই কথায় মিলে মানুষের সংসার। মানুষের পক্ষে কেবল যে অশোকের গল্প, আক্‌বরের গল্পই সত্য তা নয়; যে রাজপুত্র সাত-সমুদ্র-পারে সাতরাজার-ধন-