পাতা:লিপিকা-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.djvu/৭৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৫৮
লিপিকা

ফসলের ক্ষেত, বীজ পোঁতা হয়ে গেচে। কেবলি উঠে যেতে হয়, সরে’ যেতে হয়।

 ভারি এক ব্যস্ত মেয়ে স্বর্গের উৎস থেকে রোজ জল নিতে আসে।

 পথের উপর দিয়ে সে চলে’ যায় যেন সেতারের দ্রুত তালের গতের মত।

 তাড়াতাড়ি সে এলো খোঁপা বেঁধে নিয়েচে। তবু দুচারটে দুরন্ত অলক কপালের উপর ঝুঁকে পড়ে’ তার চোখের কালো তারা দেখ্‌বে বলে উঁকি মার্‌চে।

 স্বর্গীয় বেকার মানুষটি একপাশে দাঁড়িয়ে ছিল, চঞ্চল ঝর্‌নার ধারে তমাল-গাছটির মত স্থির।

 জান্‌লা থেকে ভিক্ষুককে দেখে রাজকন্যার যেমন দয়া হয়, এ’কে দেখে মেয়েটির তেম্‌নি দয়া হল।

 “আহা, তোমার হাতে বুঝি কাজ নেই!”

 নিশ্বাস ছেড়ে বেকার বল্‌লে, “কাজ কর্‌ব তার সময় নেই।”

 মেয়েটি ওর কথা কিছুই বুঝ্‌তে পার্‌লে না। বল্‌লে, “আমার হাত থেকে কিছু কাজ নিতে চাও?”

 বেকার বল্‌লে, “তোমার হাত থেকেই কাজ নেব বলে দাঁড়িয়ে আছি।”