পাতা:লুকোচুরি - প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/১৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৮
দারােগার দপ্তর, ১৯৬ সংখ্যা।

 এই প্রকার সাব্যস্ত করিয়া আমি প্রত্যেক কথায় তিনটী অক্ষর তিনটী লাইনে লিখিলাম। তাহার পরের কথাটীর তিনটী অক্ষর ঠিক পূর্ব্ব কথাটীর মত অক্ষরের পার্শ্বেই লিখিলাম। এইরূপে সমস্ত কথাগুলি সাজান হইলে পাঠ করিলাম।

“বহুদিন পরে সন্ধান পাইয়া
ছি এই পত্র প্রথম নিশানা জা
নিয়া মৃত্যুর জন্য প্রস্তুত হও”

 উল্লিখিত লেখাগুলি পত্রাকারে সাজাইলে “বহুদিন পরে সন্ধান পাইয়াছি। এই পত্র প্রথম নিশানা জানিয়া মৃত্যুর জন্য প্রস্তুত হও।”

 পত্রের সাঙ্কেতিক ভাষা পাঠ করিয়া বড়ই সন্তুষ্ট হইলাম। যদিও না পড়িয়াই উহার মর্ম্ম অনুমানে বুঝিতে পারিয়াছিলাম, তত্রাপি এখন উহার প্রকৃত অর্থ বাহির করিতে সক্ষম হইয়া অত্যন্ত আনন্দিত হইলাম।

 পত্রখানির মর্ম্মভেদ করিবার পর আমি ভাবিলাম, অনাথনাথের শ্বশুর মহাশয় নিশ্চয়ই হিন্দু। যখন তিনি বর্দ্ধমান জেলায় কৃষিকর্ম্ম করিয়া অর্থোপার্জ্জন করিতেছিলেন, সেই সময়ে আমার বিশ্বাস, তিনি কতকগুলি লোক রাখিয়া শূকরের ব্যবসায় আরম্ভ করেন। এরূপ শোনা গিয়াছে যে, বৌদ্ধ-পুরোহিতগণ এক সময়ে বাঙ্গালা পর্য্যন্ত আধিপত্য বিস্তার করিয়াছিলেন। যেখানে অনাথনাথের শ্বশুরের জমীদারী ছিল, হয়ত পূর্ব্বে সেইস্থানে কোন বৌদ্ধ-মঠ ছিল। অনাথনাথ যখন সেই পবিত্র স্থানে অপবিত্র অপরিষ্কৃত ও ঘৃণিত জন্তুর ব্যবসায় আরম্ভ করিলেন, তখন বৌদ্ধগণ তাহা জানিতে পারিয়া ভয়ানক ক্রুদ্ধ হইলেন কিন্তু ইংরাজ-রাজত্বে সাক্ষাৎ