পাতা:লুকোচুরি - প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/২২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২২
দারােগার দপ্তর, ১৯৬ সংখ্যা।

 ঐ সমস্ত বন্দোবস্ত করিয়া আমি অনাথবাবুকে নিকটে বসিতে বলিলাম। তিনি সম্মুখে উপবেশন করিলে আমি বলিলাম, “আপনার স্ত্রী এক ভয়ানক ষড়যন্ত্রের ভিতর পড়িয়াছেন। আজ হউক, কাল হউক বা দশদিন পরেই হউক, ঐ পত্র-লেখকগণ তাঁহারই উপর তাহাদের বহু দিনের আক্রোশ মিটাইবে। এ ষড়যন্ত্র সম্প্রতি হয় নাই, বহুদিনের ষড়যন্ত্র। আমার দৃঢ় বিশ্বাস, যদি আপনার স্ত্রী কলিকাতায় থাকিতেন, তাহা হইলে বহুদিন পূর্ব্বে তিনিও অদৃশ্য হইয়া যাইতেন। সৌভাগ্যক্রমে তিনি এতদিন কানপুরে ছিলেন বলিয়াই এখনও তিনি জীবিত।

 অনাথনাথ কোন কথা বলিলেন না। তাঁহার স্ত্রী সর্ব্বাঙ্গ আবৃত করিয়া তাঁহাদিগের নিকট হইতে কিছুদূরে উপবেশন করিয়াছিলেন। আমার শেষ কথাগুলি শুনিয়া তিনি নীরবে রোদন করিতে লাগিলেন। তাহার চক্ষু দিয়া অনবরত অশ্রুপাত হইতে লাগিল দেখিয়া, আমি পুনরায় অনাথনাথের দিকে চাহিয়া বলিলাম, “এখন আমার একটী জিজ্ঞাস্য আছে।”

 অনাথনাথ শশব্যস্তে জিজ্ঞাসা করিলেন, “কি বলুন?”

 আ। প্রতিজ্ঞা করুন যে, আমি যাহা বলিব, ঠিক সেই মত কার্য্য করিবেন।

 অ। নিশ্চয়ই। আমরা যখন আপনার আশ্রয় গ্রহণ করিয়াছি, তখন আপনার কথা মতই কার্য্য করিব। আমাদের কি আর উদ্ধারের কোন উপায় নাই?

 আ। উপায় নাই এমন কথা বলিবেন না। তবে আমার পরামর্শমত কার্য্য করা চাই। এখন আমি যেরূপ বুঝিয়াছি, তাহা বলিতেছি। আপনার শ্বশুর মহাশয় বর্দ্ধমানে যেখানে কৃষিকার্য্য