মনে করিয়াছিলাম, বাড়ীতে পঁহুছিয়াই অনাথবাবুর সহিত দেখা হইবে; কিন্তু তাহা হইল না। আমি প্রায় অর্দ্ধ ঘণ্টাকাল চারিদিকে তাঁহার অন্বেষণের জন্য পায়চারি করিয়া বেড়াইলাম, কিন্তু তাহাতেও কোন ফল হইল না। ভাবিলাম, তাঁহারা হয়ত তখনও সেখানে উপস্থিত হন নাই।
এই মনে করিয়া আমি সেই নিভৃতস্থানে গিয়া উপবেশন করিতেছি, এমন সময়ে অনাথবাবুকে অদূরে দেখিতে পাইলাম। আমি তখনই তাঁহার নিকট গমন করিয়া সংবাদ জিজ্ঞাসা করিলাম। তিনি বলিলেন, আর কোন পত্রাদি তখনও পান নাই।
সে যাহা হউক, তৃতীয় পত্র না পাওয়ায় আমার মনে এক অভূতপূর্ব আনন্দের উদয় হইল। আমি ভাবিলাম, এইবার তাহাদের ষড়যন্ত্র নিষ্ফল করিতে পারিব। এই স্থির করিয়া অনাথনাথকে লইয়া সেই স্থানে উপবেশন করিলাম।
কিছুক্ষণ পরে সহসা এক দাসী আসিয়া অনাথনাথকে ডাকিল। সে বলিল, “বাড়ীতে বুড়িমার সাংঘাতিক অসুখ করিয়াছে। আপনাদিগকে এখনই যাইতে হইবে।”
অনাথনাথ জিজ্ঞাসা করিলেন, “বাড়ীর ভিতর খবর দিয়াছ?”
দাসী বলিল, “আজ্ঞে হাঁ তাঁহার খাওয়া হইয়া গিয়াছে। তিনি এখনই যাইবেন।”
অনাথনাথ আমার মুখের দিকে চাহিলেন। আমি তাঁহার আন্তরিক অভিপ্রায় বুঝতে পারিলাম। বলিলাম, “যদি এই দাসী আপনার স্ত্রীর সহিত যায়, তাহা হইলে আমার বিশেষ কোন আপত্তি নাই। ইহাকে বেশ চতুর বলিয়া বোধ হইতেছে। কিন্তু আপনার সঙ্গে যাওয়াই উচিত। দাসীটী কে?