পাতা:লেফ্‌টেন্যাণ্ট সুরেশ বিশ্বাস.djvu/১০৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
খ্রীষ্টধর্মে দীক্ষা।
৭৯

ঘাটে ও রেলওয়ে ষ্টেশনে তাহাকে থাকিতে হইত,কোন সাহেবমেম আসিলে তিনি তাহাদিগকে স্পেন্সেস হোটেলে লইয়া আসিতেন। তাহাদের মালামাল রেল বা জাহাজ হইতে জানা বা রেলে বা জাহাজে পাঠাইয়া দেওয়া,—তাহাদিগকে কলি- কাতার নানা দর্শনীয় স্থান দেখান, —সুরেশের ইহাই কার্য্য ছিল। সুরেশ শুদ্ধ করিয়া ইংরাজী বলিতে না জানিলেও বেশ তাড়াতাডি ইংরাজী বলিতে পারিতেন। যে সকল সাহেব মেমের সহিত তাহাকে কথা কহিতে হইত, তাহাদের অনেকেই বাঙ্গালা বা হিন্দী জানিতেন না, সুতয়াং; সুরেশ যে ইংরাজী জানিতেন তাহতেই তাহায় কাজ বেশ ভালরূপ চলিয়া যাইত। তিনি যে কাজে এই সময়ে নিযুক্ত হইয়াছিলেন, তাহা হইতে অন্যত্র গিরা অন্য রূপে জগতব্যপী নাম করিতে পারিবেন, তাহা সে সময়ে কে ভাবিয়াছিল। তবে এ সময়ে এইরূপে সাহেবদের মধ্যে থাকিতে পাইয়া যে সাহেবদিগের অবতাবের তাহার বিশেষ বহুদর্শিতা জন্মিয়াছিল সে বিষয়ে সন্দেহ নাই।

 এই রূপে সুরেশ কিয়দ্দিবস স্পেন্সেস হোটেলে রহিলেন। কিন্তু বহু দিন এ চাকরী তাহার ভাল লাগিল না, এক কার্য্যে বহু দিন মনোনিবেশ করিয়া থাকা উহায় পক্ষে অসম্ভব। তাহার মন চঞ্চল হইয়া উঠিল। তিনি প্রত্যহই গঙ্গার তীরে যাইতেন, প্রায়ই সাহেবদিগকে আনিতে বা তুলিয়া দিতে জাহাজে যাইতেন। এইরূপে জাহাজে যাওয়া আসায় তাহার প্রাণ বিলাত যাইবার জন্য ব্যাকুল হইয়া উঠল। রাত্রি দিন শয়নে স্বপনে সর্বদা তাহার একই চিন্তা, তিনি দেশ ত্যাগ করিয়া যে কোন উপায়ে একবার বিলাত যাইবেনই যাইবেন,