পাতা:লেফ্‌টেন্যাণ্ট সুরেশ বিশ্বাস.djvu/১০৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৮০
লেফটেন্যাণ্ট সুরেশ বিশ্বাস।

তাহারই জন্য শত প্রকার উপায় উনি মনে মনে করিতে লাগিলেন,কিন্তু কোনটীই তাহার মনের বাসনা পূর্ণ করিবার পক্ষে সুবিধাজনক বলিয়া বোধ হইল না। এই রূপে মাসের পর মাস কাটিয়া গেল, সুরেশের বিলাত ভ্রমণ ইচ্ছা পূর্ণ হইবার কোনই সম্ভাবনা হইল না। যে সকল সাহেব বিলাত হইতে এদেশে বেড়াইতে আসিতেন এবং যাহারা স্পেন্সেস হোটেলে বাস করায় সুরেশের সহিত সর্বদাই কথা বার্তা কহিতেন, সুরেশ তাহাদের অনেকের নিকট তাহার মনের বাসনা জ্ঞাপন করিয়া তাহাদের সঙ্গে যাইতে চাহিয়া ছিলেন, কিন্তু তাহাতেও কোন ফল হইল না। সাহেবেরা তাহার কথায় কেবল মৃদু হাস্য করিতেন।

 সুরেশ জানিতেন বিলাত যাইবার টাকার জন্য যদি তিনি তাহার আত্মীয় স্বজনের নিকট গমন করেন, তাহা হইলে তাহাতে কোনই ফল হইবে না, তাহারা এক পয়সাও দিবেন না। তাহাকে সকলেই ভুলিয়াছিল, কেবল ভুলেন নাই তাহার স্নেহময়ী জননী; কিন্তু তাহার হাতে টাকা নাই যে তিনি তাহাকে টাকা দিয়া তাহার জীবনের উদ্দেশ্য ও উচ্চাভিলাস পূর্ণ কয়াইবেন! সুরেশের পিতায় ভয়ে তিনি পুত্রের সহিত দেখা করিতেও সাহস করিতেন না। বাড়ীতে কেহ না থাকিলে তিনি সুরেশের কনিষ্ঠকে দিয়া সুরেশের প্রিয় আহারীয় দ্রব্য কখন কখন তাহাকে পাঠাইয়া দিতেন। সুরেশের খুল্লতাতও মধ্যে মধ্যে তাহার সহিত সাক্ষাৎ করিতে আসিতেন, কিন্তু ইহাতে্ সুরেশের ভবিষ্যত জীবনের কোনই কিছু হইল না। সুরেশ তৃণের ন্যায় সংসার স্রোতস্বিনী বক্ষে ভাসিয়া চলিলেন।