পাতা:লেফ্‌টেন্যাণ্ট সুরেশ বিশ্বাস.djvu/১৪৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
লণ্ডনে প্রথম রাত্রি।
১২৩

 তাঁহার বোধ হইল একটা লম্বা ছায়ামূর্ত্তি তাঁহার বিছানার চারি দিকে নিঃশব্দে ধীরে ধীরে পদচারণ করিতেছে। সে যে কে তাহা তিনি কিছুই স্পষ্ট দেখিতে পাইতেছেন না। অন্ধকারে কিছুই ভাল দেখা যাইতেছিল না। কিয়ৎক্ষণ অপেক্ষা করিয়া তিনি গলায় শব্দ করিলেন। তাঁহার বোধ হইল অমনি যেন সেই মূর্ত্তি বাতাসে মিলিয়া গেল। তিনি উঠিয়া বসিয়া গৃহের চারিদিক বিশেষ করিয়া দেখিলেন,—কাহাকেও কোথায়ও দেখিতে পাইলেন না। তখন পকেট হইতে দেশ্লাই বাহির করিয়া জ্বালিলেন, দেখিলেন গৃহে কেহই নাই। শয়নের পূর্ব্বে তিনি যে রূপ দ্বার রুদ্ধ করিয়া দিয়াছিলেন এক্ষণেও সেইরূপ দ্বার রুদ্ধ আছে। তবে এ কে? এ কি ভূত? সুরেশ ভূত বিশ্বাস করিতেন না। ভূতের কথা মনে হইয়া মনে মনে হাসিলেন।

 তিনি এবার শয়ন করিলেন। কিয়ৎক্ষণ পরেই নিদ্রিত হইয়া পড়িলেন। রাত্রে আর কোন কিছুই ঘটিল না। অতি প্রত্যুষে উঠিয়াই তিনি একটা ভাল বাসা ও কোন কাজের চেষ্টায় বহির্গত হইলেন। সমস্ত দিন নানা স্থানে ঘুরিয়া বেড়াইলেন কিন্তু কোন কিছুই করিয়া উঠিতে পারিলেন না। যেখানে হাজার হাজার সাহেব মেম প্রত্যহ চাকুরীর হাহাকার করিয়া দ্বারে দ্বারে ঘুরিয়া বেড়াইতেছে, সেখানে বিদেশী বাঙ্গালী বালক সুরেশ যে চাকুরী পাইবেন এ রূপ আশা করাই উন্মত্ততা ভিন্ন আর কিছুই নহে। সন্ধ্যার সময় ক্লান্ত ও পরিশ্রান্ত হইয়া তিনি বাসায় ফিরিলেন। তৃষ্ণার্তও হাইয়াছিলেন। একটু সুরা পান করিলে দেহে ও মনে বল পাইবেন ভাবিয়া তিনি যেখানে মদ বিক্রয় হয়