পাতা:লেফ্‌টেন্যাণ্ট সুরেশ বিশ্বাস.djvu/১৭৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
সারকাসে।
১৪৯

তাঁহার খ্যাতিও বৃদ্ধি পাইতে লাগিল,—ক্রমে তারতবাসী সারকাসওয়ালার নাম চারিদিকেই বাপ্ত হইল।

 সারকাসে প্রবেশ করিয়া সময় পাইলেই তিনি নানা পুস্তকাদি পাঠ করিতেন কিন্তু অনেক সময়ে তাহার সহ-সারকাসক্রীড়কগণ তাহার পড়া শুনার বিশেষ ব্যাঘাত দিত। বিশেযতঃ তাঁহাদের দলে যে কয়েকটী বালিকা ছিল, তাহারা তাহাকে বড়ই জ্বালাতন করিত;—তাঁহার হাতে বই দেখিলেই কাড়িয়া লইত,—তাঁহাকে পড়িতে দেখিলে তাহার নিকট আসিয়া হাসিত, তাহাকে হাসাইত, কিছুতেই পড়িতে দিত না। দলের অধিকাংশ যুবক যুবতীই সর্বদা আমোদ প্রমোদে থাকিতে ভালবাসিত, তাহাদের নিকট আমোদ প্রমোদই জীবনের সারব্রত ছিল; সময় ও সুবিধা পাইলেই হাসিতামাসা খেলা ধূলায় সময় কাটাইত,—ইহারা সুরেশকেও দলে লইবার জন্য ব্যগ্র হইল,—তাঁহাকে পড়াশুনা করতে দেখিলে নিকটে আসিয়া ব্যাঘাত ঘাটাইত।

 এইরূপে সারকাস দলে সুরেশের দিন কাটিতে লাগিল। এ দলের সহিত তিনি ইংলণ্ডের নানা শহরে ভ্রমণ করিলেন,—কিন্তু তিনি স্বদেশকে একেবারে ভুলেন নাই,—আত্মীয় স্বজনের নাম তাহার হৃদয় হইতে একেবারে মিলুপ্ত হইয়া যায় নাই। সাহেবদলে মিশিয়া পূরা সাহেব হইয়া তিনি তাহার স্বজাতিকে ভুলেন নাই। তিনি বরাবরই নিয়মিতরূপে তাঁহার খুল্লতাত কৈলাসবাবুকে পত্র লিখিতেন। যখন যেখানে যাইতেন, যাহা করিতেন, যে তাবে থাকিতেন, সকলই তাঁহাকে লিখিয়া পাঠাইতেন। স্নেহময়ী জননীর জন্য তিনি সর্ব্বদাই হৃদয়ে ব্যথা পাই-