পাতা:লেফ্‌টেন্যাণ্ট সুরেশ বিশ্বাস.djvu/১৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
অবতরণিকা

অবাধে পুরী প্রবেশ করিয়া থাকে, তাহাকে সপ্তদশ অশারোহীতে দেশজয় বলে না। নিদ্রিত বা অন্ধ, হস্তপদবদ্ধ মহাবীরের গলদেশে ফাঁসি লাগাইবার জন্য সপ্তদশ কেন, একজন অশ্বারোহী হইলেই যথেষ্ট।

 এই স্থলে আবার সেই কথা। যখন বিশ্বাসঘাতকতায় বঙ্গগৌরব নষ্ট হইয়াছে, তখন বাঙ্গালীজাতি যে বিশ্বাসঘাতক তাহাতে আর সন্দেহ কি? যুক্তি অপূর্ব্ব, হৃদয়গ্রাহিণীও বটে। বিশ্বাসঘাতকতায় বঙ্গ বিজিত হইরাছে সত্য কিন্তু তাহা বলিয়া বিশ্বাসঘাতকতা ইহাদিগের চরিত্র নহে। বিশাল পৃথিবীতে এমন কোন্ স্বর্গভূমি আছে, যেখানে বিশ্বাসঘাতকতা নাই,—যে দেশের ইতিহাসের অধ্যায় এইরূপ বিশ্বাসঘাতকতায় কলঙ্কিত নহে? তাহা বলিয়া কোন মূর্খ ___, সেই সেই জাতি বিশ্বাসঘাতক। মানবজাতি মধ্যে সর্ব্বত্র সদসৎব্যক্তি আছে, বৈচিত্র্যের জন্য বুঝি চিরকালই থাকিবে।

 স্বীকার করিলাম, কেবল সপ্তদশসংখ্যক যবন বীরদ্বারা বঙ্গদেশ বিজিত হইয়াছে, কিন্তু আফগানদিগকে তাহার অর্দ্ধ ভাগ মাত্র জয় করিতে এক শতাব্দীরও অধিক অতিবাহিত করিতে হইয়াছিল। কত সহস্র রীর অজস্রধারে শোণিত বিসর্জ্জন করিয়া আংশিক বিজয় লাভে অধিকারী হয়। মুসলমানদিগের পূর্ণ সৌভাগ্যের সময় বঙ্গের স্থানে স্থানে স্বাধীন নরপতি ছিলেন, তাঁহাদের সৈন্য সমস্তই বাঙ্গালী। এখন একটী সন্দেহ, হয়ত তাঁহারা বড় বড় জমীদায় ছিলেন। পশ্চিম ভারত হইতে সিপাহী আনিয়া রাজ্য করিতেন। তখন পশ্চিম হইতে সিপাহী আমদানী হইত না—বঙ্গের পাইক বিখ্যাত ছিল। পলাশীর