পাতা:লেফ্‌টেন্যাণ্ট সুরেশ বিশ্বাস.djvu/১৮৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

প্রেম।
১৬১

লাগিয়াছিল, কিন্তু তিনি সেই হৃদয় বেদনার মধ্যেও মনে একটু সাত্বনা পাইলেন। ভাবিলেন, বালিকার নিকট হইতে দূরে থাকিলে, বালিকাকে না দেখিলে তিনি তাহাকে হৃদয় হইতে অন্তহৃত করিতে পারিবেন; এবং এই উদ্দেশে-বালিকার সহিত সকল সম্বন্ধ বিছিন্ন করিবার জন্য-তিনি তাহার পত্রের দেওয়া পর্যন্ত বন্ধ করিলেন। কিন্তু হায়! এত করিয়াও তিনি সেই সুন্দর মুখখানি ভুলিতে পারিলে না; অহোরাত্রি সেই সুন্দর মুখখানি তাঁহার হৃদয়ে প্রতিফলিত হইয়া তাঁহাকে ব্যাকুল করিতে লাগিল। বালিকার সহিত আর কখনও দেখা হইবার সম্ভাবনা ছিল না, এবং বহুদিন দেখা সাক্ষাৎ না হইলে তিনি চাই কি তাহাকে ভুলিলেও ভুলিতে পারিতেন। কিন্তু তগবান অন্যরূপ ব্যবস্থা করিলেন, তিনি মনে মনে বাহা স্থিয় করিলেন ঘটনাচক্রে তাহা উল্টাইয়া গেল।

 সুরেশ সারকাস দলের সহিত ইয়োরোপের নানা শহরে ফিরিতেছিলেন। এইরূপে ঘুরিতে ঘুরিতে তিনি জারমান দেশীয় একটী নগরে উপস্থিত হইলেন। সহসা একটা দোকানে তিনি সেই জারমান বালিকাকে দেখিলেন। তিনি এক্ষণে আয় বালিকা নাই, পূর্ণ যৌবনে ভাসমানা, সুরেশও এখন আর সেই পূর্ব্বের শ্বশ্রুহীন সুরেশ নাই, তিনিও যৌবনে পদার্পণ করিয়াছেন। বহুকাল উভয়ে উভয়কে দেখেন নাই, উভয়ের আকৃতিতে অনেক পরিবর্তন ঘটিয়াছে, কিন্তু উভয়ে উভয়ের কেহও কাহাকে বিস্মৃত হন নাই। যখন উভয়ে উভয়ের সম্মুখীন হইলেন, তখন উভয়েই স্তম্ভিত হইয়া দাঁড়াইলেন, কাহারও বাঙ্‌নিস্পত্তি হইল না। যদিও বহুদিন উভয়ে সাক্ষাৎ নাই, তবুও