পাতা:লেফ্‌টেন্যাণ্ট সুরেশ বিশ্বাস.djvu/১৯৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

নব অনুরাগ।
১৭১

সেই অটল প্রকৃতি সিংহপালকের প্রার্থনা তিনি অধিক কাল অপূর্ণ রাখিতে সক্ষম হয়েন নাই। সুরেশ এতাবৎ কাল ভয় কাহাকে বলে জানিতেন না,—অসংখ্য ভীতিপূর্ণ আসন্ন মৃত্যু অদ্যাপি তাহাকে বিচলিত করিতে সক্ষম হয় নাই। নানা মূর্ত্তিতে মৃত্যু অদ্যাবধি তাহাকে নানা বিভীষিকা প্রদর্শন করিয়াছে,—মারী ভয়ে ভীতি, ক্রীড়নশীল সর্পকুলের দংশনাশক, শিক্ষিত ব্যাঘ্র বা সিংহ নিচয়ের দংশন ভয়, এবং তৎশিক্ষিত করিকুশের দশনভীতি, প্রভৃতি কিছুতেই তিনি অণুমাত্রও শঙ্কিত হয়েন নাই। উপস্থিত প্রেমই তাহার জীবনের এক মাত্র বন্ধন; যদি তাহাতে নিরাশ হয়েন, তাহা হইলে মৃত্যু তদপেক্ষা শতগুণে বাঞ্ছনীয় বলিয়া তাহার মনে হইত। এ সকল উদ্দেশ্যবিহীন বৃথা বাক্য নহে-প্রকই সুরেশের প্রণয়িনী ঘটনা-বৈচিত্র্যময় জীবনের প্রতি স্বভাবতই আকৃষ্ট হইতেন এবং সেই কারণেই সুরেশের প্রতি কথঞ্চিৎ পক্ষপাতীও হইয়াছিলেন। সুরেশের নির্ভিকতা, জীবনকে অতি সামান্য তৃণ অপেক্ষায় লঘু জ্ঞান, বিনা দ্বিধায় কি নৃশংস ব্যাঘ্র, কি ভয়াবহ অহিকুল, কি ভীষণদন্ত বারণ, কি তীব্রচক্ষুষ্মান ক্রূরমতি বন্য মার্জার (Lynx) প্রভৃতি হিংস্রক জন্তু মুখে অগ্রসর হইতে প্রবৃত্ত দেখিয়া ভীষক দুহিতা বস্তুতঃই মোহিত াহইয়াছিলেন। বিবিধ বন্যজন্তু তাঁহার সেই মোহিনী তীব্র দৃষ্টিপ্রভাবে তাহাদের স্বাভাবিক হিংস্র ও দুর্দ্দান্তভাব ভুলিয়া নিমেষে গৃহপালিত পশুদিগের মত শান্তমূর্তি ধারণ করিয়া তাঁহার বশীভূত হইত।

 ক্রমে উভয়ের মধ্যে ধীরে ধীরে যতই ঘনিষ্ঠতা বর্দ্ধিত হইতে লাগিল-পরস্পরের প্রতি বন্ধুত্ব জন্মিল, ততই রমণী স্বীয় পূর্ব্ব