পাতা:লেফ্‌টেন্যাণ্ট সুরেশ বিশ্বাস.djvu/৪৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
নাথপুরের বিশ্বাস।
২১

উঠিত না। পরিবারগণ স্বদেশেই থাকিত। স্ত্রীপুত্রাদি পরিজন লইয়া কর্মস্থলে প্রবাস তখনকায় রীতি ছিল না। সুতরাং সেকালের পল্লীগ্রামগুলিও শ্রীভ্রষ্ট হয় নাই। অর্থোপার্জ্জনের জন্য যিনি যেখানেই কর্ম্ম করুন না কেন, সেখানে কেবল উপার্জ্জনের জন্যই অবস্থান করিতেন কিন্তু সর্ব্বদাই মনে জাগিত,সেই প্রিয় জন্মভূমি, যে স্থানে তিনি জন্মগ্রহণ করিয়াছেন, যে স্থানে তাঁহার প্রিয় পরিজনবর্গ ও পূর্ব্বপুরুষগণের চরণরেণু বা কীর্ত্তিকাহিনী বর্ত্তমান, যেখানে কপট আত্মীয়তায় অপরকে ভুলাইয়া আত্মীয়বৎ করিবার আবশ্যক হয় না। আর সেই প্রবাসের পর প্রিয় পরিজনের মিলন বড়ই সুমধুর ছিল। তখন স্নেহ মমতা মূর্ত্তিমতী হইয়া প্রবাসের দীর্ঘদিন যামিনীর সুখ দুঃখময়ী স্মৃতি দূরীভূত করিত। নগরের বিলাস বিভ্রম তখন জনসমাজের হৃদয় এতদূর কলুষিত করে নাই। সে কাল গিয়াছে!

 গিরিশচন্দ্রের দুই পুত্র ও তিন কন্যা; সুরেশচন্দ্রই তাঁহার জ্যেষ্ঠ পুত্র; সুরেশচন্দ্রের বয়স এই ৩৮ বৎসর মাত্র কিন্তু তিনি যেরূপ প্রতিকূল অবস্থায় পড়িয়াছিলেন, যেরূপ বিপদ অতিক্রম করিয়াছেন এবং এক্ষণে যেরূপ গৌরবে গৌরবান্বিত, তাহা অসামান্য, অসাধারণ এবং প্রকৃত বীরোচিত।

 সকল দেশের সর্ব্ব সময়েই মনস্বীব্যক্তিগণ বলিয়া থাকেন, বালক ভবিষ্যতে কিরূপ ব্যক্তি হইবে, প্রথম হইতেই তাহার আভাস পাওয়া যায়। সুরেশচন্দ্রের জীবনেও তা সুস্পষ্ট প্রতিভাত। বাল্যকাল হইতেই সুরেশচন্দ্র ভয় কাহাকে বলে জানিত না। প্রসিদ্ধ ইংরাজবীর নেল্‌সন সাহেব বাল্যকালে