পাতা:লেফ্‌টেন্যাণ্ট সুরেশ বিশ্বাস.djvu/৫০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২৬
লেফ্‌টেন্যাণ্ট সুরেশ বিশ্বাস।

নহে যে, গৃহে ঝাড় লণ্ঠন জ্বলিবে। তখন ঘটনাক্রমে সুরেশচন্দ্রের মাতা স্থির করিলেন, আগুনের উপর ভয় জন্মাইয়া তিনি গৃহকার্য্যে যাইবেন। গৃহের এক কোণে সেই ‘‘সনাতন’’ দীপ জ্বলিতেছিল। সন্তানকে কোলে লইয়া সুরেশ চন্দ্রের মাতা সেই দীপের দিকে অগ্রসর হইলেন, সুকুমার শিশুর সেই কোমল করপল্লবগুলি নাচাইতে নাচাইতে সেই দীপশিখার নিকট ধরিলেন। মার কোলে নির্ভর বালক হস্ত আরও বাড়াইয়া দিল। হস্তে বিলক্ষণ লাগিল, কিন্তু বালকের রোদন বা চক্ষুকোণে অশ্রু বিন্দুমাত্র নাই। মা মনে করিয়াছিলেন, সামান্য উত্তাপ লাগিলেই বালক কাঁদিয়া উঠিবে বা হস্ত সরাইয়া লইবে, কিন্তু তাঁহার সে বালক নহে। বালক অগ্নিতে হস্ত বাড়াইয়া রাখিয়া হাসে নাই বটে, কিন্তু তাহার মুখে যন্ত্রণার কোনরূপ চিহ্ন লক্ষিত হয় নাই। কাতরতার পরিবর্ত্তে কেবল মাত্র অপূর্ব্ব নীরবতা, কিন্তু মার প্রাণ তখন কত কাঁদিয়াছিল, কে বলিবে? সন্তানের অদ্ভুত সহ্যগুণ দেখিয়া তিনি বিস্মিত হইয়া সেই অবধি তাঁহার শাসন সঙ্কল্প পরিত্যাগ করিয়াছিলেন। ভীষণ অগ্নিময় সমরক্ষেত্রে সুরেশচন্দ্র যে নির্ভয়ে অগ্নিক্রীড়া করিবেন, এই সামান্য ঘটনাতেই যেন তাহার সূচনা।

 সুরেশচন্দ্রের বয়স যখন দুই বৎসর মাত্র তখন হইতেই তাঁহার নির্ভীকতা ও দুঃসাহসের অদ্ভুত পরিচয় পাওয়া যায়। দুই বৎসরের শিশু একাকী খেলা করিতেছে, অকস্মাৎ নিকটবর্ত্তী প্রাচীর গাত্রে একটী “মৈ”এরদিকে বালকের দৃষ্টি পড়িল, বালক উহার নিকটবর্ত্তী হইল, একে একে উহার সর্ব্বোচ্চ স্থানে উঠিল; উহা ভূমিতল হইতে ২০ ফুট উচ্চ। বালক উচ্চে উঠিয়া