পাতা:লেফ্‌টেন্যাণ্ট সুরেশ বিশ্বাস.djvu/৮১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
মেমসাহেব ও পদ্ম।
৫৭

কুঠিতে আনিলেন। সেখানে তাঁহার সর্ব্বঙ্গ হইতে কর্দ্দম ধৌত করিয়া দেওয়া হইল, এবং তাঁহাকে ঔষধি প্রদান করা হইল। শীঘ্রই সুরেশ সুস্থ হইয়া উঠিল। তাঁহার বিপদের কথা সকলে শুনিল, সাহেবের অতিশয় প্রীত হইলেন। যত দিন পদ্মটী শুকাইয়া ঝরিয়া না পড়িয়া গিয়াছিল, ততদিন মেম সাহেব সেটীকে বক্ষে ধারণ করিয়া রাখিয়া ছিলেন।

 যে কয়মাস সুরেশ নাথপুরে ছিলেন, সে কয়মাস তাঁহার বড়ই সুখে কাটিয়া গিয়াছিল। এখানে পিতার ধমকানি ছিল না, পড়াশোনার বড় হাঙ্গামা ছিল না, বিশেষতঃ সাহেব মেমেরা বড়ই আদর যত্ন করিতেন। দিন রাত তিনি তাঁহাদের সঙ্গে থাকিতেন, তাঁহাদের সহিত খেলা করিতেন, শিকারে যাইতেন। সাহেবদের সঙ্গে একত্রে আহার না করিলেও, তিনি অনেক দিন কুঠিতে আহারাদি করিয়াছিলেন, পূর্ব্বভাব তাঁহার ক্রমে দুর হইতেছিল।

 অবশেষে সুরেশ নাগপুর ত্যাগ করিয়া কলিকাতায় বালিগঞ্জে আসিলেন। মেম সাহেব এবং অন্যান্য সকলে অতিশয় বিষাদের সহিত তাঁহাকে বিদায় দিলেন। মেম সাহেব শীঘ্রই বিলাত যাইবেন, তিনি সুরেশকে সঙ্গে লইবার জন্য বিশেষ পীড়াপীড়ি করিতে লাগিলেন, কিন্তু সুরেশ কিছুতেই যাইতে প্রস্তুত হইলেন না। যদি তিনি সে সময়ে তাঁহাদের সহিত যাইতেন, তাহা হইলে ভবিষ্যতে তিনি ইয়োরোপে গিয়া যে ক্লেশ সহ্য করিয়াছিলেন ও বিপদে পড়িয়াছিলেন তাহা তাঁহাকে ভুগিতে হইত না। তাহা হইলে তিনি অন্যভাবে শিক্ষিত হইয়া অন্যরূপ হইতেন। কোন সময়ে মানুষের অদৃষ্টচক্র কোনদিকে