ভার্য্যা। কেন, কোন্ কথাটা ঠেকিল?
উচ্চ। গগন কাকে বলে?
ভার্য্যা। গগন বলে আকাশকে।
উচ্চ। “সন্ধ্যা গগনে নিবিড় কালিমা”—নিবিড় কাকে বলে?
ভার্য্যা। ও হরি! এই বিদ্যাতে তুমি আমাকে শিখাবে? নিবিড় বলে ঘনকে। এও জান না? তোমার মুখ দেখাতে লজ্জা করে না?
উচ্চ। কি জান—বাঙ্গলা ফাঙ্গলা ও সব ছোট লোকে পড়ে, ও সবের আমাদের মাঝখানে চলন নেই। ও সব কি আমাদের শোভা পায়?
ভার্য্যা। কেন, তোমরা কি?
উচ্চ। আমাদের হলো polished society—ও সব বাজে লোকে লেখে— বাজে লোকে পড়ে—সাহেব লোকের কাছে ও সবের দর নেই— polished societyতে কি ও সব চলে?
ভার্য্যা। তা মাতৃভাষার উপর পালিশ-ষষ্ঠীর এত রাগ কেন?
উচ্চ। আরে, মা মরে কবে ছাই হয়ে গিয়েছেন—তাঁর ভাষার সঙ্গে এখন আর সম্পর্ক কি?
ভার্য্যা। আমারও ত ঐ ভাষা—আমি ত মরে ছাই হই নাই।
উচ্চ। Yes for thy sake, my jewel, I shall do it—তোমার খাতিরে একখানা বাঙ্গলা বই পড়িব। কিন্তু mind একখানা বৈ আর নয়!
ভার্য্যা। তাই মন্দ কি?
উচ্চ। কিন্তু এই ঘরে দ্বার দিয়ে পড়্ব—কেহ না টের পায়।
ভার্য্যা। আচ্ছা তাই।
(বাছিয়া বাছিয়া একখানি অপকৃষ্ট অশ্লীল এবং দুর্নীতিপূর্ণ অথচ সরস পুস্তক স্বামীর হস্তে প্রদান। স্বামীর তাহা আদ্যোপান্ত পাঠ সমাপন।)
ভার্য্যা। কেমন বই?
উচ্চ। বেড়ে। বাঙ্গলায় যে এমন বই হয়, তা আমি জানিতাম না।
ভার্য্যা। (ঘৃণার সহিত) ছি! এই বুঝি তোমার পালিশ-ষষ্ঠী? তোমার পালিশ-ষষ্ঠীর চেয়ে আমার চাপড়া-ষষ্ঠী, শীতল-ষষ্ঠী অনেক ভাল।