বাপ তখন ছেলেকে ধরিয়া আনিয়া প্রহার আরম্ভ করিলেন। ছেলে বলিল, “মার কেন বাবা।”
বাপ। মার্ব না? তুই পরের দ্রব্য সামগ্রী লুটে পুটে আনিস্।
ছেলে। বাবা, চোরের ভয় হয়েছে, তাই ঢিল কুড়িয়ে জমা করেছি—পরের সামগ্রী ত ঢিল।
(৩)
সরস্বতীপূজা উপস্থিত। বাপ প্রাতঃকালে ছেলেকে বলিলেন, “যা, একটা ডুব দিয়ে এসে অঞ্জলি দে—নহিলে খেতে পাবিনে।”
ছেলে। খেয়ে দেয়ে বিকেলে অঞ্জলি দিলে হয় না?
বাপ। তাও কি হয়? খেয়ে কি অঞ্জলি দেওয়া হয়, রে পাগল?
ছেলে। তবে এ বছরের অঞ্জলি আর বছর একেবারে দিলে হয় না? এবার বড় শীত।
বাপ। তা হয় না—সরস্বতীকে অঞ্জলি না দিলে কি বিদ্যা হয়?
ছেলে। একটা বছর কি ধারে বিদ্যা হয় না?
বাপ। দূর, মূর্খ। যা, ডুব দিয়ে আস্গে যা। অঞ্জলি দেওয়া হ’লে দুটো ভাল সন্দেশ দেব এখন।
“আচ্ছা” বলিয়া ছেলে নাচিতে নাচিতে ডুব দিতে গেল। বড় শীত—তেমনি বাতাস—জল কন্কনে। তখন ছেলে ভাবিয়া চিন্তিয়া, ঘাটে একটা পাঁচ বছরের বাগ্দীর ছেলে রহিয়াছে দেখিয়া তাহাকে ধরিয়া, গোটা দুই চুবানি দিল। তার পর তাকে জল হইতে তুলিয়া টানিয়া বাপের কাছে ধরিয়া আনিল। বলিল, “বাবা! নেয়ে এসেছি।”
বাপ। কই বাপু,—কই নেয়েছ?
ছেলে। এই যে বাগ্দী ছোঁড়াটাকে চুবিয়ে এনেছি।
বাপ। বড় কাজই করেছ—তুই নেয়ে এসেছিস্ কই?
ছেলে। বাবা, “আত্মবৎ সর্ব্বভূতেষু” ওতে আমাতে কি তফাৎ আছে? ওর নাওয়াতেই আমার নাওয়া হয়েছে। এখন সন্দেশ দাও।