পাতা:লোকসাহিত্য - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

cछ्प्लङ्घजोप्ञ छ्फु। 〉○・ পরিণত করা যায়— মনোনীত না হইলে অনায়াসে তাহাকে সংশোধন করা সহজ এবং শ্রান্তি বোধ হইলেই তৎক্ষণাৎ পদাঘাতে তাহাকে সমভূমি করিয়া দিয়া লীলাময় স্বজনকর্তা লঘুহৃদয়ে বাড়ি ফিরিতে পারে। কিন্তু, যেখানে গাথিয়া গাঁথিয়া কাজ করা আবশ্যক সেখানে কর্তাকেও অবিলম্বে কাজের নিয়ম মানিয়া চলিতে হয়। বালক নিয়ম মানিয়া চলিতে পারে না— সে সম্প্রতিমাত্র নিয়মহীন ইচ্ছানন্দময় স্বৰ্গলোক হইতে আসিয়াছে। অামাদের মতো সুদীর্ঘকাল নিয়মের দাসত্বে অভ্যস্ত হয় নাই, এইজন্য সে ক্ষুদ্র শক্তি-অনুসারে সমুদ্রতীরে ৰালির ঘর এবং মনের মধ্যে ছড়ার ছবি স্বেচ্ছামত রচনা করিয়া মর্তলোকে দেবতার জগৎলীলার অনুকরণ করে । এইজন্যই আমাদের শাস্ত্রে ঈশ্বরের কার্যের সহিত বালকের লীলার সর্বদা তুলনা দেওয়া হইয়া থাকে, উভয়ের মধ্যেই একটা ইচ্ছাময় আনন্দের সাদৃশু আছে। পূর্বেদ্ধত ছড়াটিতে সংলগ্নতা নাই, কিন্তু ছবি আছে। কাজিতলা, ত্রিপূর্ণির ঘাট এবং ওড়বনের ঘটনাগুলি স্বপ্নের মতো অদ্ভুত, কিন্তু স্বপ্নের মতো সত্যবৎ । স্বপ্নের মতো সত্য বলতে পাঠকগণ আমার বুদ্ধির সজাগতা সম্বন্ধে সন্দিহান হইবেন না। অনেক দার্শনিক পণ্ডিত প্রত্যক্ষ জগৎটাকে স্বপ্ন বলিয়া উড়াইয়। দিয়াছেন । কিন্তু, সেই পণ্ডিত স্বপ্নকে উড়াইতে পারেন নাই। তিনি বলেন, প্রত্যক্ষ সত্য নাই– তবে কী আছে ? না, স্বপ্ন আছে। অতএব দেখা মাইতেছে, প্রবল যুক্তির দ্বারা সত্যকে অস্বীকার করা সহজ, কিন্তু স্বপ্নকে অস্বীকার করিবার জো নাই। কেবল সজাগ স্বপ্ন নহে, নিদ্রাগত স্বপ্ন সম্বন্ধেও এই কথা খাটে। সুতীক্ষুবুদ্ধি পণ্ডিতেরও সাধ্য নাই স্বপ্নাবস্থায় স্বপ্নকে অবিশ্বাস করেন। জাগ্রত অবস্থায় তাহারা সম্ভব সত্যকেও সন্দেহ করিতে ছাড়েন না, কিন্তু স্বপ্নাবস্থায় তাহারা চরমতম অসম্ভবকে অসংশয়ে গ্রহণ করেন । অতএব বিশ্বাসজনকতা-নামক যে গুণটি সত্যের সর্বপ্রধান গুণ হওয়া উচিত সেটা যেমন স্বপ্নের অাছে এমন আর কিছুরই নাই।