পাতা:লোকসাহিত্য - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/২৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ছেলেভুলানো ছড়া ૨ છે মধ্যে কম্মিন কালে শুনা যায় নাই। কিন্তু ষাহাদের কাছে ছন্দের তালে তালে সুমিষ্ট কণ্ঠে এই-সকল অসংলগ্ন অসম্ভব ঘটনা উপস্থিত করা হইয়া থাকে তাহার। বিশ্বাসও করে না, সন্দেহও করে না, তাহার মনশ্চক্ষে স্বপ্লবৎ প্রত্যক্ষবৎ ছবি দেখিয়া যায় । বালকের ছবিও অতিশয় সহজে স্বল্লায়োজনে দেখিতে পায়। ইহার কারণ পূর্বে একস্থলে বলিয়াছি, ইচ্ছাশক্তি সম্বন্ধে বালকের সহিত দেবতার একটা সাদৃশ্ব দেখা যায়। বালক যত সহজে ইচ্ছামাত্রই স্বজন করিতে পারে আমরা তেমন পারি না। ভাবিয়া দেখো, একটা গ্রন্থিবাধা বস্ত্রখণ্ডকে মুণ্ডবিশিষ্ট মনুষ্য কল্পনা করিয়া তাহাকে আপনার সস্তানরূপে লালন করা সামান্ত ব্যাপার নহে। আমাদের একটা মৃতিকে মানুষ বলিয়া কল্পনা করিতে হইলে ঠিক সেটাকে মানুষের মতো গড়িতে হয়— যেখানে যতটুকু অমুকরণের ত্রুটি থাকে তাহাতেই আমাদের কল্পনার ব্যাঘাত করে। বহির্জগতের জড়ভাবের শাসনে আমরা নিয়ন্ত্রিত ; আমাদের চক্ষে যাহা পড়িতেছে আমর কিছুতেই তাহাকে অন্যরূপে দেখিতে পারি না। কিন্তু শিশু চক্ষে যাহ! দেখিতেছে তাহাকে উপলক্ষমাত্র করিয়া আপন মনের মতো জিনিস মনের মধ্যে গড়িয়া লইতে পারে, মচুন্যমূতির সহিত বস্ত্রখণ্ডরচিত খেলনকের কোনো বৈসাদৃশ্য তাহার চক্ষে পড়ে না, সে আপনার ইচ্ছারচিত স্বষ্টিকেই সম্মুখে জগজল্যমান করিয়া দেখে । কিন্তু তথাপি ছড়ার এই-সকল অযত্বরচিত চিত্রগুলি কেবল যে বালকের সহজ স্বজন-শক্তি-দ্বারা স্বজিত হইয়া উঠে তাহা নহে ; তাহার অনেক স্থানে রেখার এমন সুস্পষ্টতা আছে যে, তাহারা আমাদের সংশয়ী চক্ষেও অতি সংক্ষেপ বর্ণনায় ত্বরিত-চিত্র অনিয়া উপস্থিত করে । 한 এই ছবিগুলি একটি-রেখা একটি-কথার ছবি । দেশলাই যেমন এক আঁচড়ে দপ, করিয়৷ জলিয়া উঠে বালকের চিত্তে তেমনি একটি কথার টানে একটি